বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কর্মরত দুই শতাধিক চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতিবঞ্চিত। প্রায় দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে তারা এমন অভিযোগ করে আসছেন। পদোন্নতিবঞ্চিত চিকিৎসকদের সঙ্গে মঙ্গলবার (৬ জুন) বৈঠকে বসছেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
বৈঠকের বিষয়ে বিএসএমএমইউ উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছায়েফ উদ্দিন আহমদ জানান, সকাল ১০টায় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ পদোন্নতিবঞ্চিতদের ডেকেছেন।
বৈঠকে পদোন্নতিবঞ্চিত চিকিৎসকদের অভিযোগ শোনার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। একই সঙ্গে আগামী ৮ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি উত্থাপন করার আভাসও পাওয়া যাচ্ছে।
তবে একাধিক চিকিৎসক মনে করছেন, তাদের কনসালট্যান্ট হিসেবে পদায়নের চেষ্টা করা হতে পারে। এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সেটি তারা মানবেন না বলেও জানিয়েছেন পদোন্নতিবঞ্চিতদের অনেকেই।
তারা বলছেন, অনেকেই প্রায় ১৬ বছর ধরে পদোন্নতি না পেয়ে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। অনেকের অবসরের সময়ও সন্নিকটে। যদিও তাদের এফসিপিএস ও এমডি সম্পন্ন করা আছে।
তারা আরও অভিযোগ করেন, সরকারি সেক্টরে যেসব চিকিৎসক কর্মরত তারা চিকিৎসাক্ষেত্রে উচ্চতর ডিগ্রি সম্পন্ন করলেই তাদের দ্রুত কনসালট্যান্ট পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ডিপিসির মাধ্যমে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। কিন্তু বিএসএমএমইউতে কর্মরত প্রায় দুই শতাধিক পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করা চিকিৎসক তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলেও দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতিবঞ্চিত।
২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে, ২০০৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর অনষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৩৩তম সভায় উচ্চতর ডিগ্রি সম্পন্ন মেডিকেল অফিসারদের স্ববেতনে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত রহিত করা হয়।
পদোন্নতিবঞ্চিত কয়েকজন মেডিকেল অফিসার আরও জানান, রহিত করা পদোন্নতি আইনটি পুনরায় চালু না করলে বিপুলসংখ্যক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, মেডিকেল অফিসার হিসেবে অবসর গ্রহণ করবেন। পদোন্নতিবঞ্চিত হওয়ার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তাদের যথাযথ শিক্ষাব্যবস্থা থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছেন তেমনি রোগীরাও তাদের বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এর আগে সমস্যা সমাধানে তিন দফা স্মারকলিপিও দিয়েছিলেন তারা।
একাধিক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএসএমএমইউ বিশ্ববিদ্যালয় হলেও স্থায়ীভাবে নিয়োগকৃত চিকিৎসকদের পদোন্নতির সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরবর্তীতে যারা পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করবেন, এ ধরনের চিকিৎসকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা ছিল যেখানে তাদের স্ববেতনে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হতো। পরবর্তীতে প্রয়োজন অনুযায়ী সে পদে আত্মীকরণ করা হতো; কিন্তু ২০১২ সালে সেই আইনটি রহিত করা হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন