আগামী ২৫ আগস্ট সারাদেশে অর্ধদিবস হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। জ্বালানি তেল ও সারের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমূখে বিক্ষোভ মিছিল শেষে এই কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ১২টার দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড় থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে বিক্ষোভ-পদযাত্রা শুরু করে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
সাড়ে ১২টার দিকে শাহবাগ মোড়ে মিছিলটি পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে চাইলে বাম জোটের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। এরপর সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করে নেতা-কর্মীরা। সেখানেই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাম জোটের সমন্বয়ক অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার।
তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য ও সারের দাম কমানোর দাবিতে ২৫ আগস্ট সারাদেশে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতাল পালন করা হবে। অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার আরো বলেন, আমাদের এই কর্মসূচির শ্লোগান হলো- দাম কমাও, জান বাচাঁও। এই দেশে ৫ শতাংশ মানুষ বেহেশতে আছে। আর ৯৫ শতাংশ মানুষ হাবিয়া নামক জাহান্নামে আছে। দেশে দুই ধরনের অর্থনীতি চলছে। একটা হচ্ছে ৫ শতাংশ মানুষের অর্থনীতি, যারা দেশের টাকা লুট করছে। আরেকটি হচ্ছে ৯৫ শতাংশ মানুষের অর্থনীতি, আমরা এই ৯৫ শতাংশ মানুষের সঙ্গে আছি।
তিনি বলেন, ভোট ডাকাতির সরকার, শেখ হাসিনার সরকার মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। পুলিশকে বলবো বাধা দিয়ে এই সরকারকে শেষ রক্ষা করতে পারবেন না। দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম জোরদার করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তৃতা করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্ক্সবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্ক্সবাদী)’র নেতা বিধান দাশ প্রমূখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেলেও সরকার দাম বাড়ানোর উৎসবে মেতে উঠেছে। দাম কমানোর যৌক্তিক দাবি তাদের কানে পৌঁছাচ্ছে না। বরং মন্ত্রীরা এসব দাবি, মানুষের দুরবস্থা নিয়ে মানুষের সঙ্গে রসিকতা করছে।
তারা বলেন, বিশ্ব ও দেশের সংকট উত্তরণে অন্যতম রক্ষাকবজ হবে আমাদের কৃষি। সার ডিজেলের দাম বাড়িয়ে এই কৃষিকেও সংকটে ফেলা হলো। সরকার দাম কমিয়ে জনগণকে স্বস্তি না দেওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে বলে উল্লেখ করেন নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশ থেকে পুলিশের বেরিকেড ও মিছিল প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় পর্যন্ত মিছিল যেতে না দেওয়ায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সমাবেশ শেষে ২৫ আগষ্ট হরতালের সমর্থনে মিছিল নিয়ে রাজপথ প্রদক্ষিণ করে বাম জোটের নেতা-কর্মীরা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন