ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শহীদ নূরে আলমের স্ত্রী বাদী হয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) আরমান হোসেনসহ ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত আরো ২৫-৩০ জনকে আসামী করা হয়েছে এই মামলায়।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিকালে নূরে আলমের স্ত্রী ইফফাত জাহান এই মামলাটি ভোলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, বিদ্যুতের সীমাহীন লোডশেডিং, বিদ্যুৎখাতে লুটপাট-দুর্নীতির প্রতিবাদে গত ৩১শে জুলাই বিএনপির জেলায় জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। এই কর্মসূচিতে ভোলা জেলা সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে মিছিল বের করার চেষ্টা করে জমায়েত হওয়া বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মিছিলের শুরুতেই বিনা উস্কানিতে লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও গুলি চালায় পুলিশ। গুলিতে ঘটনাস্থলেই স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুর রহিম নিহত হন। আহত হন আরো ৫০ জনের বেশি। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত হন ছাত্রদলের ভোলা জেলা সভাপতি নূরে আলম। আহতদের অনেকেই এখনো বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঘটনার পরপরই পুলিশ বাদী হয়ে উল্টা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শহীদ আব্দুর রহিমের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা করেন তাঁর স্ত্রী। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) নূরে আলমের স্ত্রী মামলা করলেন।
নূরে আলমের স্ত্রীর আইনজীবী ড. আমিনুল ইসলাম বাছেত গণমাধ্যমকে জানান, ৩১শে জুলাই বিএনপির সমাবেশে গুলি চালালে গুরুতর আহত হয়েছিলেন ছাত্রদল নেতা নূরে আলম। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ দিন পর ঢাকায় তার মৃত্যু হয়।
পুলিশের গুলিতে নূর আলম মারা গেছেন দাবি করে তার স্ত্রী বাদী হয়ে আজ আদালতে মামলাটি করেন।
ড. আমিনুল ইসলাম বাছেত আরও জানান, বিচারক আলী হায়দার কামাল মামলার এজাহার গ্রহণ করে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর মধ্যে তথ্য প্রমাণ আদালতে দাখিলের জন্য সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় পুলিশ সাব ইন্সপেক্টর মো. আনিস উদ্দিনের বিরুদ্ধে নূর আলমের মুখে ও মাথায় সরাসরি গুলি করার অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিকে, গুলি করে বিএনপির দুইজনকে হত্যার পর উল্টো বিএনপির নেতা-কর্মীদেরই বিরুদ্ধেই সরকারি কাজে বাধা ও হত্যা মামলাসহ ২টি মামলা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহম্মদ এনায়েত হোসেন জানান, এ ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার মামলায় ৭৫ জনের নামে ও অজ্ঞাত অন্তত ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়াও, হত্যা মামলায় অজ্ঞাত ২৫০ জন থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে সাব ইন্সপেক্টর জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন