প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় রাজবাড়ীতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে গতকাল শুক্রবার ১৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামসহ প্রশ্নপত্র উদ্ধার করা হয়।পরীক্ষা চলাকালে রাজবাড়ী থেকে একজন প্রশিক্ষক, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসার পাঁচ শিক্ষক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিদর্শক, ব্যাংক কর্মকর্তা, এনজিও কর্মচারী, গৃহিণীসহ ১৩ জনকে আটক করা হয়। তাঁদের আটকের পর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে প্রেস ব্রিফিং করা হয়। এতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. সালাহউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাইন উদ্দিন চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) শাহনেওয়াজ, ডিআইও ওয়ান সাইদুর রহমানসহ জেলা পুলিশের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, পরীক্ষা চলাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা পুলিশের সদস্যরা রাজবাড়ী পৌরসভার দক্ষিণ ভবানীপুর এলাকায় প্রয়াত আবুল খায়ের ছেলে ও মানিকগঞ্জ জেলার চরকালিকাপুর মাদরাসার জুনিয়র শিক্ষক মিজানুর রহমানের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় বাড়ির মালিক মিজানুর রহমানসহ চক্রের প্রধান হোতা এবং পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের প্রশিক্ষক এবং ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া থানার আওরাবুনিয়া গ্রামের মো. সুলতান আহমেদ হাওলাদারের ছেলে মো. মাঈনুল ইসলাম হাওলাদারকে (৪২) আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রায় দিনভর অভিযান চালিয়ে রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার খামারবাড়ী গ্রামের প্রয়াত জুলমত মণ্ডলের ছেলে এবং খামারবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইব্রাহিম হোসেন, কালুখালীর ছোট কলকলিয়া গ্রামের আকিম মণ্ডলের ছেলে ও রাজবাড়ী সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সাগর আহম্মেদ, কালুখালীর শিকজান গ্রামের বাদু মালার ছেলে ও মোবাইল যন্ত্রপাতির ব্যবসায়ী বিজয় বালা, ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া থানার উত্তর তালগাছিয়া গ্রামের প্রয়াত নাজেম আলীর ছেলে ও কাঁঠালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নূরুল হক হাওলাদার, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া থানার দক্ষিণ তালগাছিয়া গ্রামের প্রয়াত শমশের আলী সরদারের ছেলে ও কাঁঠালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. হারুন সরদার, রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার সংগ্রামপুর গ্রামের খবির উদ্দিনের ছেলে ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিদর্শক রেজাউল করিম, একই উপজেলার চরনারায়ণপুর গ্রামের আব্দুল মাজেদের ছেলে ও এনজিও জাগরণের কর্মচারী আবু ছালমান, একই উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের প্রয়াত আমেদ আলী মণ্ডলের ছেলে মুনছুর মণ্ডল এবং মনসুরের স্ত্রী ও নিয়োগ পরীক্ষার্থী ফরিদা বেগমকে (একটি ক্ষুদ্রাকার ডিভাইসসহ), জেলার পাংশা উপজেলার চরআফড়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে ও শরীয়তপুরের কৃষি ব্যাংকের অফিসার রুবেল মাহমুদ এবং জেলার কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের মালিয়াট গ্রামের ছালাম শিকদারের ছেলে ও স্থানীয় আড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুমান হাসান রনিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান জানিয়েছেন, অর্থের বিনিময়ে এই চক্র প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত। এই চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় রাজবাড়ী থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন