বেশ কিছুদিন চালের বাজার স্থিতিশীল থাকার পর গত দুই সপ্তাহ ধরে চালের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। মাত্র একসপ্তাহের ব্যবধানে সবধরনের চালের দাম কেজিতে অন্তত ১ থেকে ৩ টাকা বেড়ে গেছে।
রাজধানীর চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহে যে চাল ৪৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা গেছে, আজকে সেই চাল বিক্রি করতে হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা কেজি দরে। ব্যবসায়ীরা মোটা চাল এখন ৪৮ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। পাশাপাশি বেড়েছে মাঝারি চালের দামও। গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া ৫৬ টাকা কেজি মাঝারি চাল শুক্রবার বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও চিকন চালের দাম কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নাজিরশাইল চালে কেজিতে বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৮-৭০ টাকা। মিনিকেট চালে প্রতি কেজিতে ২ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৭-৬৮ টাকা, আটাশ চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২ টাকা। আটাশ চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৩ টাকা।
কাওরান বাজারে চালের আড়তের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহেই চিকন চালেরর দাম বাড়তে শুরু করে। আর এ সপ্তাহে মোটা চাল ও মাঝারি মানের চালের দাম কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা বেড়েছে।
চালের দাম বেড়ে প্রসঙ্গে আড়তদার জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে বাজারে নতুন চাল (আমন) উঠেছে৷ তারপরও চালের দাম চড়া। মূল কারণ ডিজেলের দাম বৃদ্ধি। কৃষি জমি চাষ ও সেচের জন্য ডিজেল প্রয়োজন। এই মুহূর্তে তার প্রভাব বাজারে না পড়লেও পরিবহণ ভাড়া বেড়েছে অনেক। আগে একটি ট্রাক আসতে ভাড়া পড়তো ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এখন সে ভাড়া দিতে হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। তার প্রভাবে চালের দাম এক দুই টাকা বেড়েছে। কারণ অতিরিক্ত ভাড়াতো আমরা পকেট থেকে দেবো না। সেটা ভোক্তাদেরই দিতে হবে।
একই কথা বললেন শান্তিনগর বাজারের খুচরা চালের ব্যবসায়ী আমিন হোসেন। তিনি বলেন, সরকার ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পরিবহণ ব্যয় বেড়ে গেছে। এর ফলে চালের দাম কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চাল ব্যবসাীয় আমিন হোসেন আরও বলেন, আমরা পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে চাল কিনে বেশি দামে বিক্রি করি। আড়ৎদারদের কাছে দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে বলে ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ফলে পরিবহণ ভাড়া বেড়েছে। যার প্রভাবে চালের দামও বেড়েছে।
সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য থেকে জানা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম বেড়েছে ১.০৯ শতাংশ এবং এই সপ্তাহে মাঝারি মানের চালের প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ১.৬১ শতাংশ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এক কোটি ৫০ লাখ ৪৬ হাজার মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে, যা বছরের মোট উৎপাদিত ধানের ৩৯ শতাংশ। গত বছর দেশে মোট ধান উৎপাদিত হয়েছিল তিন কোটি ৮৬ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে আমন ধান ছিল এক কোটি ৪৪ লাখ টন। সে হিসেবে এবার ছয় লাখ টন বাড়তি আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
পূর্বপশ্চিম
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন