‘কাউসার’ হলো, জান্নাতের একটি ঝরনার নাম। যার পানি হবে মিশকের মতো সুগন্ধি। দুধের মতো সাদা। যে তা থেকে একবার পান করবে, তার আর কখনো পিপাসা হবে না। প্রিয় নবী (সা.) তাঁর উম্মতদের এই ঝরনার পানির বিবরণ এভাবে দিয়েছেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, আমার হাউজের প্রশস্ততা এক মাসের পথের সমান। তার পানি দুধের চেয়ে সাদা, তার ঘ্রাণ মিশকের চেয়ে বেশি সুগন্ধযুক্ত এবং তার পানপাত্রগুলো হবে আকাশের তারকার মতো অধিক। তা থেকে যে পান করবে সে আর কখনো পিপাসার্ত হবে না। (বুখারি, হাদিস : ৬৫৭৯)
হাউজে কাউসার যেমন হবে : এই ঝরনার দুই ধারে থাকবে মুক্তার গম্বুজ, যা এখানে আগত মুমিনদের এক অন্য রকম মনোমুগ্ধকর পরিবেশ দেবে। আনাস ইবনে মালেক (রা.) সূত্রে রাসুল (সা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমি জান্নাতে ভ্রমণ করছিলাম। এমন সময় এক ঝরনার কাছে এলে দেখি যে তার দুই ধারে ফাঁপা মুক্তার গম্বুজ আছে। আমি বললাম, হে জিবরাইল, এটা কী? তিনি বলেন, এটা ওই কাউছার, যা আপনার প্রতিপালক আপনাকে দান করেছেন। (বুখারি, হাদিস : ৬৫৮১)
যারা পানি পানের সুযোগ পাবেন : এই ঝরনা মহান আল্লাহ তাঁর রাসুলকে বিশেষ পুরস্কার হিসেবে দান করবেন। এই ঝরনা থেকে রাসুল (সা.)-এর সেই উম্মত পানি পান করতে পারবে, যারা তাদের জীবনকে রাসুল (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক সাজাতে সক্ষম হয়েছে এবং বিদআত থেকে দূরে থাকতে পেরেছে। যারা দ্বিনের নামে নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কার করে এবং নিজেদের পার্থিব স্বার্থে সেগুলো দ্বিন বলে চালিয়ে দেয়, ইবাদত মনে করে, মানুষকে বিদআত করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করে, তারা হাউজে কাউছারের পানি থেকে বঞ্চিত হবে। তাই আমাদের উচিত বিদআত-শিরক থেকে মুক্ত থাকা। আল্লাহকে ভয় করা। আবেগের বশবর্তী হয়ে দ্বিনের নামে এমন কিছু করা উচিত নয়, যা আমাদের উভয় জাহানে ব্যর্থ করে দেয়।
যাদের সরিয়ে দেওয়া হবে : আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) সূত্রে নবী (সা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আমি তোমাদের আগে হাউজের কাছে গিয়ে হাজির হবো। আর (ওই সময়) তোমাদের কতগুলো লোককে আমার সামনে উঠানো হবে। আবার আমার সামনে থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে। তখন আমি বলব, হে রব, এরা তো আমার উম্মত। তখন বলা হবে, তোমার পরে এরা কী নতুন কাজ করেছে তা তো তুমি জান না।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৫৭৬)
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন