চাকরি স্থায়ী করতে বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সদ্য বিতর্কিতভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।যেকোনো মূল্যে চাকরিতে যোগদান করতে চান বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য বিদায় নেওয়া উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্তরা।
সবশেষ মঙ্গলবার (১৬ জুন) শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হক চৌধুরী নওফেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্তদের একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘন্টা কথা বলেন তারা।
প্রতিনিধি দলের একটি সূত্র জানায়, নিয়োগ কেন বৈধ হবে সে বিষয়ে উপমন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন প্রতিনিধি দল। তবে উপমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের আদেশ সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না বললে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২(৫) অধ্যাদেশটি দেখিয়ে তাকে ধারণা দেন তারা।
তারা জানিয়েছেন, এ অধ্যাদেশ দেখে উপমন্ত্রী জানান, যদি এমনটি হয়, তবে তাদের চাকরি না হওয়ার সুযোগ নেই। মন্ত্রণালয়ে এটি বাতিল করতে পারে না। চাকরিপ্রাপ্তদের এ বিষয়টি ভালোভাবে দেখার পাশাপাশি দ্রুত এর সমাধানকল্পে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কথা বলার আশ্বাস দেন উপমন্ত্রী।
এর আগে এ বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন চাকরিপ্রাপ্তদের এই প্রতিনিধি দল। এ সময় তাদের চাকরিতে যোগদানের ব্যবস্থা করতে নেতাদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
তারা জানিয়েছেন, তা ছাড়া এ নিয়োগে ৯৩ জন আওয়ামী পরিবারের সন্তান চাকরি পেয়েছেন, সেটাও তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন বিতর্কিতভাবে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রাজনৈতিক নেতারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিষয়টির সুপারিশ করবেন বলে তাদের আশ্বস্ত করেছেন।
এ বিষয়ে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত মাহফুজ আল আমিন বলেন, ‘গত কয়েকদিন যাবৎ আমাদের ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক নেতাদের নিকট গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলেছি। যেহেতু বিষয়টি মানবিক, সুতরাং বিষয়টি তাদের বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। তারাও আমাদের এই নিয়োগের বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন ‘
শিক্ষামন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে জানতে চাইলে এই ছাত্রলীগ নেতা জানান, ‘আমরা শিক্ষামন্ত্রীর সাথেও দেখা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে তিনি দেখা করতে পারেননি। তবে আমরা তার দপ্তরে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘পরে আমরা শিক্ষা উপমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। তাকে আমাদের অবস্থা জানিয়েছি। তিনি আমাদের বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন।’
এই নিয়োগকে আর অবৈধ বলার সুযোগ নেই দাবি করে তিনি বলেন, ‘এই নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা উপাচার্য রাখেন এবং তিনি তার ক্ষমতাবলে তা করেছেন। সুতরাং এটাকে আর অবৈধ বলার সুযোগ নেই।’ তাছাড়া শিক্ষামন্ত্রী নিজেও বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ৬ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিতর্কিতভাবে শতাধিক নিয়োগ দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য বিদায় নেওয়া উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। ওইদিন রাতেই অবৈধ ঘোষণা করে তদন্ত শুরু করে মন্ত্রণালয়।
তদন্ত শেষে নিয়োগের বেশ কিছু অনিয়ম পাওয়ায় তা বাতিলের সুপারিশ করার পাশাপাশি উপাচার্যের বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে তদন্ত কমিটি। বর্তমানে পুলিশ পাহারায় দিনাতিপাত করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন