দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আর মৃত্যু আরও খানিকটা কমে আসার সুখবর এল রোজার ঈদের দিনে।
দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নয় সপ্তাহ পর নেমে এসেছে হাজারের নিচে; আর সাত সপ্তাহ পর দৈনিক মৃত্যু ত্রিশের নিচে নেমে এসেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত এক দিনে দেশে ৮৪৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে আরও ২৬ জনের।
এর আগে এক দিনে এর চেয়ে কম রোগী শনাক্তের খবর এসেছিল গত ৮ মার্চ। সেদিন ৮৪৫ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আর ২৪ মার্চ এর চেয়ে কম মৃত্যুর খবর এসেছিল; সেদিন মোট ২৫ মারা যাওয়ার কথা জানানো হয়েছিল সরকারের তরফ থেকে।
অবশ্য নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও আগের দিনের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। গত এক দিনে সারা দেশে ৭ হাজার ৮৩৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, আগের দিন এ সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৪৭১টি।
গত এক দিনে নতুন আক্রান্তদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৫৩৫ জনে। আর আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত মোট ১২ হাজার ৭৬ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এ ভাইরাস।
সরকারি হিসাবে আক্রান্তদের মধ্যে একদিনে আরও ৮৫২ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন; এ পর্যন্ত সুস্থ মোট হয়েছেন ৭ লাখ ২০ হাজার ৪৭১ জন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা সাড়ে সাত লাখ পেরিয়ে যায় গত ২৭ এপ্রিল। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মে তা সাড়ে ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ১৯ এপ্রিল রেকর্ড ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৬ কোটি ১২ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৩ লাখ ৪৫ হাজারের বেশি মানুষের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৪৫৯টি ল্যাবে ৭ হাজার ৮৩৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৫৬ লাখ ৯৮ হাজার ৫২৮টি নমুনা।
নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৮২ শতাংশে। এর আগে বৃহস্পতিবার ১৩ হাজার ৪৭১টি নমুনা পরীক্ষা হয়, শনাক্তের হার ছিল ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আর বুধবার নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ২৯৬টি, শনাক্তের হার ছিল ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত ৪১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৫০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে; বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১৫ লাখ ২০ হাজার ৬৭৮টি।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের ১৯ জন পুরুষ আর নারী ৭ জন। তাদের ২১ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ৫ জন বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান।
তাদের মধ্যে ১৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৭ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ৯ জন ঢাকা বিভাগের, ৭ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩ জন খুলনা বিভাগের, ২ জন সিলেট বিভাগের এবং ৩ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
এ পর্যন্ত মৃত ১২ হাজার ১০২ জনের মধ্যে ৮ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ৩৪০ জন নারী।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন