নঈম নিজাম
আচ্ছা কবি নজরুল যদি জীবিত থাকতেন আর তাঁর লেখনীর ক্ষমতা থাকত কী হতো? নিশ্চিত লেখনীর দায়ে যেতেন কারাগারে। গরম কফির পেয়ালায় ঝড় তুললেন আমার এক বন্ধু। বললেন, নিশ্চিত করে বলছি মামলা-মোকদ্দমা মোকাবিলা করতে করতে নজরুলের জীবন শেষ হতো। শেষ বয়সে বাকরুদ্ধ হয়েও রেহাই মিলত না। সমাজমাধ্যম তাঁর বাপদাদা-চৌদ্দগুষ্টির জান হারাম করত। দ্রোহ, প্রেমের কবিতা ভিতর থেকে আসত না। মনের কষ্টে হয়ে উঠতেন দিশাহারা। ইংরেজ শাসনকালে নজরুল আটক হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট আইনে মামলা হয়েছিল। এখন হলে ধর্মবিরোধী আখ্যা দিয়ে জেলে ঢোকানো হতো। পড়তেন জামিন অযোগ্য ধারায়। রাস্তাঘাটে মারধরের শিকার হতেন সব ধর্মের মৌলবাদীর হাতে। অসাম্প্রদায়িক চেতনা আর চিন্তাধারার কথা উঠে আসত না। নজরুল নিয়ে এত কথার কারণ ফকির লালন সাঁই। লালনের গানের ছত্র সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করে একজন বিপদে আছেন। তাঁকে যেতে হয়েছে কারাগারে। লালন ছিলেন শান্তিবাদী মানুষ। নজরুলের মতো বিদ্রোহী ছিলেন না। লালনের প্রভাব রবীন্দ্র-নজরুলের ভিতরেও ছিল। লালন বেড়ে উঠেছেন জীবনের সঙ্গে লড়ে দুঃখ মনের ভিতরে লালন করে। তাঁর কথা ও সুরে ছিল আধ্যাত্মিকতার প্রভাব। অন্তরে ছিল ধর্মীয় বিভেদের জ্বালা। জাত-ধর্ম তাঁকে কষ্ট দিত।
আধ্যাত্মিক বাউল ছিলেন লালন ফকির। তাঁর সাধনার বিষয় ছিল মানবতা। মানুষে মানুষে বিভেদ কমানো। হিংসার পথ পরিহার। বাউল লালনের গানের কোনো পাণ্ডুলিপি নেই। মুখে মুখেই অনুসারীরা গানগুলো টিকিয়ে রেখেছেন। শান্তিপ্রিয় মানুষটিও রেহাই পাননি। তাঁর ওপর হামলা হয়েছিল কুষ্টিয়া, পাবনায়। তাঁকে সমর্থন দিয়ে বিপদে থাকতেন সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ। লড়াই বিষয় না হলেও অস্তিত্ব রক্ষায় লালনকেও লড়তে হয়েছিল। জীবন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার করতে হয়েছিল আধ্যাত্মিকতাবাদ। লালনের বাস ছিল মানুষের মনের ভিতরেই। জীবনকে তিনি দেখতেন ভিন্ন উচ্চতার স্বাপ্নিকতায়। এ কারণে হয়তো লালনে মুগ্ধ হয়েছিলেন মার্কিন কবি এলেন গিন্সবার্গ। লালন দর্শনে আকৃষ্ট হয়ে কবিতাও লিখেছেন তিনি। লালন জীবিতকালে নিজের ধর্মপরিচয় বলে যাননি। তাঁর গানের মাঝে রয়েছে অসাম্প্রদায়িকতার ছোঁয়া। ধর্মবাদীরা সে যুগে তাঁকে নাস্তিকও আখ্যা দিয়েছিল। হেনস্তা করেছিল পদে পদে। অনুসারীরা তাঁকে রক্ষা করেছে। লালন বলেছেন, ‘সত্য কাজে কেউ নয় রাজি/সবই দেখি তা না না না/জাত গেল জাত গেল বলে/একি আজব কারখানা.../ আসবারকালে কি জাত ছিলে/এসে তুমি কি জাত নিলে/কি জাত হবে যাবার কালে/সেই কথা ভেবে বলো না...।’
জাত নিয়ে আক্ষেপের শেষ ছিল না লালনের। জাতের কারণে হারিয়েছিলেন আপনজনদের। সবকিছু ছাড়তে হয়েছিল। এমনকি সমাজের পাশাপাশি নিজের আপন মাকে। জাত-ধর্ম লালনকে বেশি করে ভাবাত। ভিতরে ভিতরে ভয়ংকর কষ্ট নিয়ে চলতেন। লালন লিখেছেন, ‘সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে/লালন বলে জাতের কি রূপ... দেখলাম না এই নজরে।’ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ‘মনের মানুষ’ উপন্যাসে লালনকে হিন্দু কায়স্থ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এ নিয়ে তাঁর অনুসারীদের মাঝে মতভেদ আছে। অনেকে প্রশ্ন করেন, কীসের ভিত্তিতে সুনীল এ কাজটি করলেন তা স্পষ্ট নয়। সুনীলের উপন্যাস অবলম্বনে গৌতম ঘোষ মনের মানুষ ছবিও নির্মাণ করেন। অনেক লালন অনুসারী তাঁকে মুসলমান মনে করেন। তারা এ নিয়ে আলাদা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। লালনের ধর্ম নিয়ে বিতর্ক থাকলেও তাঁর আখড়ায় মুসলিম, হিন্দুসহ সব ধর্মের মানুষই যায়। এখন সাদা চামড়ার খ্রিস্টানসহ অন্য ধর্মের মানুষেরও আনাগোনা বেড়েছে। সবাই কাজ করে লালনের সাধনা নিয়ে। যাতে বেরিয়ে আসে মানবতার কথা। মনের গহিনের আরেকটি মানুষের চিন্তা-চেতনা।
লালনের জন্ম কেউ বলেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী, কেউ ঝিনাইদহ। কারও মতে যশোর। বাবার নাম মাধব কর, মায়ের নাম পদ্মাবতী। স্থানীয় বাউলদের সঙ্গে তীর্থ ভ্রমণে গিয়ে বসন্ত রোগে আক্রান্ত হন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় ভয়াবহভাবে। সঙ্গীরা তাঁকে মৃত ভেবে মুখাগ্নি করে নদীতে ভাসিয়ে দেন। এক মুসলিম নারী মতিজান ও তাঁর স্বামী মলম শাহ তাঁকে উদ্ধার করেন। তাঁরা দেখলেন শ্বাস আছে। নিজেদের বাড়ি নিয়ে আসেন অসুস্থ লালনকে। মতিজান বিবি সেবা দিয়ে সারিয়ে তোলেন লালনকে। পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পর দেখা গেল লালনের একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। এ নিয়ে গবেষকরা বলেছেন, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন লালন। মুসলমান গৃহে অন্ন গ্রহণের দায়ে সমাজে আশ্রয় মেলেনি আর। পরিবারও গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। লালন বিস্মিত হলেন সবার আচরণে। তিনি সবাইকে বোঝাতে চেষ্টা করলেন অসুস্থ জ্ঞানহীন অবস্থায় তাঁকে তাঁরা উদ্ধার করেন। জীবনের তাগিদে লালন মুসলিম পরিবারে আশ্রয় নেন। তার পরও তাঁর কথা সমাজ শুনতে নারাজ। সমাজের এ নিষ্ঠুরতা লালনের মন বিদীর্ণ করে। গ্রামের বাইরে অপেক্ষা করে ক্লান্ত লালন আবার ফিরে আসেন আশ্রয়দানকারী সেই মতিজান-মলম শাহের কাছে। লালনকে তাঁরা পুত্রস্নেহে গ্রহণ করেন। এখানেই লালন দীক্ষা নেন সিরাজ সাঁইয়ের কাছে।
গান করতে গিয়ে ঠাকুর-জমিদারদের রোষানলে ছিলেন লালন। সে সময় লালনের পাশে একজন সাংবাদিক দাঁড়িয়েছিলেন বলিষ্ঠভাবে। তিনি ‘গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’র সম্পাদক কাঙাল হরিনাথ। এতে ক্ষুব্ধ হন জমিদাররা। তাঁরা কাঙাল হরিনাথের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেন। লালন তাঁর শিষ্যদের নিয়ে হরিনাথের পাশে দাঁড়ান। সমাজের শোষণ-অনাচারের বিরুদ্ধেও লালনের অবস্থান ছিল। রবীন্দ্রনাথ লালন প্রভাবিত ছিলেন। খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়’ গানটি রবীন্দ্রনাথের ‘গোরা’ উপন্যাসের শুরুতেই আছে। আবার রবীন্দ্রনাথের অনেক গানেও আছে লালনের প্রভাব। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবারের একাংশের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। লালনের একমাত্র স্কেচটি তৈরি করেন রবীন্দ্রনাথের ভাই জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর। বজরায় এ ছবি আঁকা হয়। লালন সংসার নিয়ে নিজের ঘর খুঁজেছেন, ‘আমার ঘরখানায় কে বিরাজ করে/জনম ভরে একদিনও তারে দেখলাম নারে...।’ তিনি বলেছেন, ‘না জেনে ঘরের খবর তাকাও কেন আসমানে/খুঁজলে আপন ঘরখানা/তুমি পাবে সকল ঠিকানা...।’ আহারে সারা জীবন খোঁজার পরও মানুষ কি তার আসল ঠিকানা খুঁজে পায়? লালনের মতো অনেক মনীষী একটা জীবন শুধু কাটিয়ে দিয়েছেন ঘরের খোঁজ করে। তারপর চুপচাপ সবাই চলে যান। লালন ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর পরলোক গমন করেন। তার পর থেকে অনুসারীরা তাঁর কবর এলাকায় লালনচর্চা করে চলেছেন।
লালনের মতো অনেক কিছুতে আধ্যাত্মিকতায় মগ্ন ছিলেন কবি নজরুলও। নজরুল ছিলেন আরেকজন মানবতাবাদী কবি। তিনি একদিকে লিখেছেন প্রেমের কবিতা, অন্যদিকে দ্রোহের গান। ঠাঁই চেয়েছেন মসজিদের পাশে। আবার লিখেছেন শ্যামাসংগীত। তাঁর গান ছাড়া রমজান, ঈদ-পূজা কোনোটাই হয় না। ভালোবাসা ও মানবতার এ কবি গেয়েছেন ‘সাম্যের গান’। আবার প্রতিবাদে নেমেছিলেন রাজপথে। ভাঙার চেষ্টা করেছেন ‘কারার লৌহকপাট’। প্রেয়সীর জন্য জীবন করেছেন তুচ্ছ। ঘুরেছেন পথে-ঘাটে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছিলেন বলিষ্ঠ। লিখেছেন ব্রিটিশদের শৃঙ্খলভাঙার কবিতা। অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। এই তো সেদিন আবার পড়লাম তাঁর মন্দির ও মসজিদ লেখাটি। এ যুগে কি সম্ভব এমন লেখা? সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেখে বিষণ্ন্নচিত্তে লিখেছেন, ‘দেখিলাম, হত-আহতদের ক্রন্দনে মসজিদ টলিল না, মন্দিরের পাষাণ দেবতা সাড়া দিল না। শুধু নির্বোধ মানুষের রক্তে তাহাদের বেদি চিরকলংকিত হইয়া রইলো। মন্দির-মসজিদের ললাটে লেখা এই রক্ত কলংক রেখা কে মুছিয়া ফেলিবে বীর?’ এমন কথা নজরুল ছাড়া আর কে লিখবেন?
গেল বছর ২৪ মে আনন্দবাজার পত্রিকায় নজরুল নিয়ে একটি সংবাদ পড়েছিলাম। সংবাদটি ছিল কলকাতার নবদ্বীপে হেরিটেজ তকমা পাওয়া মন্দিরের নাট্যমঞ্চে আয়োজিত রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যায় নজরুলের ছবি টানাতে দেওয়া হয়নি। আয়োজকদের মন্দির কর্তৃপক্ষ ডেকে বললেন, নজরুল ভিন্ন ধর্মের লোক। তাঁর ছবি এখানে কোনোভাবে টানানো যাবে না। যেমন নির্দেশ তেমন কাজ। আয়োজকরা পেছনে হটলেন। তাঁরা কবি নজরুলের ছবি খুলে ফেললেন। রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যায় একজনের ছবি থাকল। আরেকজনেরটা মাটিতে ফেলে দেওয়া হলো। কী অদ্ভুত নজরুলকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ধর্মীয় সংস্কৃতি! অথচ এই নজরুল লিখেছিলেন, ‘যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান,/যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-ক্রিশ্চান’। নজরুলের চেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি আর কে ছিলেন বাংলা ভাষায়?
নজরুল খুব বেশি সময় পাননি লেখালেখির জন্য। সেনাবাহিনী থেকে ফিরে জড়ালেন লেখনীর জগতে। বঙ্গীয় মুসলমানদের দুটি গ্রুপ ছিল তাঁকে ঘিরে। এক গ্রুপ পছন্দ করত। আরেক গ্রুপ ছিল বিরোধী। এখনকার মুসলিম সমাজ কবিকে নিজেদের লোক দাবি করে কান্নাকাটি করে। সে সময় মুসলমানের একটি অংশই হইচই করল যখন কবি লিখলেন, ‘মোরা একটি বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু মুসলমান। মুসলিম তার নয়ন-মণি, হিন্দু তাহার প্রাণ’। আবার গোড়া হিন্দুরা খুশি ছিল না তাঁর ওপর। তারা খেপল কবির লেখা মন্দির ও মসজিদ প্রকাশের পর। বাস্তব জীবনে কবি নজরুল ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার। তাঁর বাড়িতে পূজা হতো। আবার নামাজও হতো। এক পুত্রের নাম রাখলেন কৃষ্ণ, আরেকজনের মুহাম্মদ। এভাবে সবাই সবকিছু পারে না। নজরুল পেরেছেন। জয় করেছেন। এক ছেলেকে নিয়ে প্রমীলা দেবী বসতেন পূজায়। আরেকজনকে নিয়ে নজরুল যেতেন নামাজে। কোনো সমস্যা ছিল না। এই কবি দুই হাতে গজল লিখেছেন। খোদা ও নবীর বন্দনায় তাঁর লেখা গজলের অভাব নেই। আবার তিনিই লিখেছেন পূজার গান। জ্বালিয়েছিলেন অসাম্প্রদায়িকতার প্রদীপ।
সাম্প্রদায়িকতা, শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে কবি লড়েছেন সারাটা জীবন। এ কারণে অনেক ভোগান্তি ও সমালোচনায় পড়তে হয়েছিল। কবি সব চ্যালেঞ্জ সামলে নিয়েছিলেন। শির উঁচু করে লিখেছিলেন, ‘গাহি সাম্যের গান-/যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান,/যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম ক্রিশ্চান’। কবি সারাটা জীবন লড়েছেন অধিকারবঞ্চিত মানুষের জন্যই। মানুষের কথা বলতে গিয়েই কারাভোগ করেছেন। জেলের ভিতরেও লেখনী থামেনি। লিখেছেন। ভারতবর্ষের স্বাধিকার আন্দোলন সমর্থন করতেন। বিদ্রোহী, বিপ্লবীরা পছন্দ করতেন কবি নজরুলকে। নেতাজি সুভাষ বসু বলতেন, ‘নজরুল আমাদের অনুপ্রেরণা।’ নজরুল এখনো আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে আছেন। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সময় জয় বাংলা স্লোগান নজরুলের কবিতা থেকে নিয়েছেন।
একটি দেশের চলার পথে সব মত-পথ একই হবে এমন কোনো কথা নেই। বঙ্গবন্ধুকন্যা এখন ক্ষমতায়। শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শেষ ঠিকানা। এ সময়ে রবীন্দ্র, নজরুল, লালন বিতর্ক অপ্রত্যাশিত। লালনের গান অথবা বাণী সমাজমাধ্যমে তুলে ধরার দায়ে কারও আটকও ভালো খবর নয়। সেদিন একজন প্রবীণ বললেন, চিন্তায় আছি। জানতে চাইলাম কী নিয়ে চিন্তা? জবাবে বললেন, শেখ হাসিনা কোনো দিন না থাকলে এ দেশের রাজনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেই চিন্তাই করছি। মানুষের চিন্তা-চেতনায় সাম্প্রদায়িকতার বীজ ঢুকে গেছে; যা আগামীকে দিন দিন কঠিন করে তুলছে।
লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন