ফরিদা আখতার
মেয়েটির নাম জানি না। ফেসবুকে এই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে ঘুরছে। বুঝতে পারছি আগুন লেগে সব কিছু পুড়ে যাওয়ার পর মেয়েটির হাসিমুখ আর তার কথা সবার মনে দাগ কেটেছে।
মেয়েটি বলছে “আমার মা বাঁচছে এটাই বেশি, আর কিছু লাগবে না। হাসবো না? আমার মা যে বাইচা আছে এটাই বেশি। সব কিছু পুইড়া যাক, আমার মা তো আছে। মানুষ থাকলে তো কামাই করতে পারবো, মানুষ না থাকলে কি হইবো। মানুষ থাকলে সব কিছু করা যাইবো। তাইলে, মা ই আছে। না বাবা নাই।’’
আমরা সবাই মেয়েটির কথা থেকে যদি মনে করি এই গরিব মানুষগুলোর বস্তিতে আগুন লাগানো পর এভাবে হাসিমুখে যদি কেউ বলে মানুষ থাকলে কামাই করতে পারবে, অতএব বস্তি থেকে যাদের এভাবে উৎখাত করা হচ্ছে তাতে কোন দোষ নাই বা গিলটি ফিল করার কিছু নাই, তাহলে আমার মনে হয় মেয়েটির হাসিমুখকে আমরা বুঝি নাই। ও আসলে এই ‘সভ্য সমাজের গালে থাপ্পর মেরেছে”। যারা আগুন লাগিয়েছে তাদের চপোটাঘাত করেছে। যারা আগুনের কারনে উৎখাত হয়েছে তাদের কি জীবন জীবিকার নিশ্চয়তা সরকার দিচ্ছে? মেয়েটির মা কি আবার কাজ পাবে? তারা থাকবে কোথায়? তাদের জীবন যে কঠিন হয়ে গেল সে দায়িত্ব কে নিচ্ছে? মেয়েটি মাকে খুঁজতে গিয়ে নিশ্চয়ই পাগল হয়ে গিয়েছিল তাই মাকে জীবিত পেয়ে এই “হাসি” বের হয়েছে। সে জানে না, তার মা কোথা থেকে খাবার যোগাবে। তার বাবা নাই, মাই সব। তাই এই হাসি। এটা তো ভয়ানক অসহায়ত্বের হাসি। এখন দায়িত্ব হচ্ছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের এই ভাবে আগুনে পুড়ে সব কিছু হারানো মানুষদের মুখে আসল হাসি ফোটানোর।
লেখক: মানবাধিকার নেত্রী
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন