‘২০০৭ সালে ১৮ বছরের একটি ছেলে আসে আমার কাছে। তার হার্টের অবস্থা খুব খারাপ। ভারতে তার অপারেশন হয়নি। তার আত্মীয়স্বজন ধরেই নিয়েছিলেন ছেলেটা মারা যাবে। তাই টাকা খরচ করে তার অপারেশন করাতে তারা রাজি ছিল না। ফুটফুটে একটা তরুণকে দেখে আমার মায়া হলো। বললাম, আমি অপারেশন করব, মরে গেলে টাকা দিতে হবে না। শেষ পর্যন্ত ছেলেটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে গেছে। আরেকটা রোগী পাই যার চার প্রজন্ম ধরে একজন করে পুরুষ সদস্য। এ রোগী না বাঁচলে বংশ রক্ষা হবে না। সব শুনে মনে হলো, হয় বংশ রক্ষা হবে না হয় নির্বংশ। অপারেশন করলাম, সফল হলাম; অপারেশন থিয়েটারের সামনে সবার কান্না, সে কী আনন্দ'- কথাগুলো বলছিলেন ডা. লুৎফর রহমান। যিনি সম্প্রতি ১৫ হাজার অস্ত্রোপচারের অনন্য মাইলফলক ছুঁয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘একেকটা সার্জারি মানে একেকটা নতুন গল্প। রোগী সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে বা তার স্বজনরা আমার চেম্বারে রান্না করা খাবার, উপহার নিয়ে আসেন। অনেক রোগী বিদেশে ঘুরতে গেলেও উপহার নিয়ে আসেন। এক মা তার ছেলেকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার আগে কেঁদেকেটে দোয়া-দরুদ পড়ে বুকে ফুঁ দিলেন। তাকে বললাম, চুক্তিতে তো এটা লেখা ছিল না। এর জন্য অতিরিক্ত ফি দিতে হবে। শুনে তিনি হেসে ফেলেন এবং বলেন, স্যার! আমার পুকুরের মাছ নিয়ে আসব আমার ছেলেকে সুস্থ করে দিন।’
ডা. লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে সম্প্রতি ল্যাবএইড হাসপাতাল হৃদরোগ-সংক্রান্ত ১২ হাজার সফল অস্ত্রোপচারের মাইলফলক ছুঁয়েছে। ডা. লুৎফর ল্যাবএইডে ১২ হাজার ও সিকদার মেডিকেলে ৩ হাজার, মোট ১৫ হাজার অস্ত্রোপচারের অনন্য মাইলফলক ছুঁয়েছেন। সম্প্রতি দেশ রূপান্তরের মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রথিতযশা এ কার্ডিয়াক সার্জন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন