করোনাভাইরাসের এই সময়ে চারদিকে একটাই কথা, ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনা ‘বাড়ালে’ সুস্থ থাকা সম্ভব। কিন্তু আসলে কি তাই? ‘বাড়ানো’ কিংবা ‘শক্তিশালী’ বলতে আমরা যা বুঝি, ইমিউন সিস্টেমের ক্ষেত্রে সেটি কি সম্ভব?
আপনি শুনে হতাশ হতে পারেন বিজ্ঞানের ভাষায় এটি সম্ভব নয়! রোগের বিরুদ্ধে যে শ্বেত রক্তকণিকা লড়াই করে তার ক্ষমতা কোনো খাবার দিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ‘বাড়াতে’ পারবেন না। এতটুকু শুনে আবার হতাশ হবেন না। মূল ব্যাপারটি হল আপনি নিয়মিত সুষম খাবার খেলে, পর্যাপ্ত ঘুমালে, নির্দিষ্ট ভিটামিন (যেমন ডি) গ্রহণ করলে আপনার ইমিউন সিস্টেম তার ‘সেরা পারফর্ম্যান্স’ আপনাকে ‘উপহার’ দেবে। অর্থাৎ নভেল করোনাভাইরাসের মতো রোগের ক্ষেত্রে সে নিজের ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করবে।
ইমিউন সিস্টেম দুটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত, সহজাত এবং অভিযোজিত। প্রথমটি তৈরি হয় অনির্দিষ্ট প্রোটিন এবং কোষের মাধ্যমে, যেটি যেকোনো ইনজুরি বা অসুস্থতার সময় (সেটি পা ভাঙাও হতে পারে) কাজ করে।
অভিযোজিত প্রতিরোধ ব্যবস্থা সেই অর্থে অনেক নির্দিষ্ট। যখন আপনার ঠাণ্ডা লাগে কিংবা কভিড-১৯ রোগের মতো কোনো কিছু দেখা দেয়, তখন সেটি সমস্যা শনাক্ত করতে ছুটে আসে। করার পর ইনফেকশনটি নিষ্ক্রিয় করতে তারা খুব চতুরতার সঙ্গে ইমিউন সেল ডিজাইন করে। সেলগুলো শরীরে থেকে যায়। আবার আপনি কোনো ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া অথবা অন্য কোনো ইনফেকশনে পড়লে পুনরায় কাজ করে। শরীরের ইমিউন সিস্টেম জানে আপনার জন্য তার ঠিক কী করতে হবে। তাই একই ইনফেকশন অল্প সময়ের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার হওয়া কঠিন। তবে অসম্ভব নয়।
ইমিউন সিস্টেমকে ‘মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন’ মনে করেন ইন্টারন্যাশনাল ফুড ইনফরমেশনের ডিরেক্টর মেগান মেয়ার। পপুলার সায়েন্স ওয়েবসাইটকে তিনি বলেন, ‘আমাদের ইমিউন সিস্টেম শক্তভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। এটি কোটি টাকার প্রশ্ন। এর কোনো অংশকে বেশি শক্তিশালী করার কোনো পদ্ধতি নেই। তবে প্রতিরোধক ব্যবস্থা যাতে ঠিকমতো কাজ করে, তার ব্যবস্থা নেয়া যায়।’
তিনি জানান, ইমিউন সিস্টেমে ঘুম খুব গুরুত্বপূর্ণ। ৮ ঘণ্টা না ঘুমালে এটি নানাভাবে রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে। অসুস্থতার সময় ভালো ঘুমাতে পারলে দ্রুত সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন