বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বর ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই প্রায় নতুন রোগী ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি ঝরছে প্রাণ। ডেঙ্গু জ্বর হলে প্রচণ্ড তাপ, তীব্র পেট ব্যথা, শরীরের মাংসপেশী ও মেরুদণ্ডে ব্যথার পাশাপাশি বমি বা বমি বমি ভাবও হচ্ছে।
সাধারণত ডেঙ্গু হলে দুই ধরনের জ্বর হয়, যার একটা হেমোরেজিক জ্বর এবং অন্যটা হচ্ছে শক সিন্ড্রোম জ্বর। হেমোরেজিক জ্বর হওয়ার প্রধান কারণ মাত্রাতিরিক্ত প্লাটিলেট কমে যাওয়া। যার ফলে রক্তক্ষরণ হয়। তবে এইবার প্লাটিলেট কমে যাওয়ার পাশাপাশি শক সিন্ড্রোম বেশি হচ্ছে। শক সিন্ড্রোমের কারণে ব্লাড প্রেশার অনেক কমে যাচ্ছে। প্লাজমা লিকেজ হয়ে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে যাচ্ছে, যার কারণে মাল্টিপল অরগ্যান ফেইলিউর হয়ে রোগীরা মারা যাচ্ছে। এজন্য একজন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর জন্য সঠিক পুষ্টির প্রয়োজন। তাকে যথাযথ ডায়েট দেওয়া হলে প্লাটিলেট অতিরিক্ত কমে যাওয়া, পানিশূন্য হওয়ার ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে প্রচুর পরিমাণ তরল জাতীয় খাবার দিতে হবে, যেন তার শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি না হয়। এজন্য ডাবের পানি, ফলের জুস (কমলা, মাল্টা, আনারস, বেদানা, তরমুজ) আদার রস, গ্রিন-টি বা হারবাল চা এবং লেবুর শরবত খাওয়াতে হবে। প্রতি দিন অন্তত তিন লিটার পানি খাওয়াতে হবে। ডাল পাতলা করে, সবজি ও মুরগির মাংস দিয়ে স্যুপ রান্না করে খাওয়ানো যেতে পারে। শিং, মাগুর, পাবদা এসব মাছ ঝোল করে কম তেল-মসলা দিয়ে রান্নান করে খাওয়ালেও পানিশূন্যতা দূর হয় সহজে। পাশাপাশি প্রোটিনের চাহিদাও পূরণ হয়। এছাড়া নরম ও সহজপাচ্য খাবার যেমন জাউ, পাতলা খিচুড়ি, দই দিতে হবে।
আরো পড়ুন :
প্লাটিলেট বাড়ানোর জন্য পেঁপে পাতার রস, মিষ্টি কুমড়ার বীজ, অ্যালোভেরার জুস, ডালিমের রস, ব্রুকলি, বাঁধাকপি, গাজর, বিটরুট, বিনস, পালংশাক, ধনেপাতা, বেসিল লিফ, কিসমিস এগুলো খাবার তালিকায় রাখতে হবে। ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় ফল যেমন পেয়ারা, আমলকি, আমড়া, কিউই, বেরিস, গ্রেপফ্রুট, পেঁপে বেশি করে দিতে হবে, যেন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের ঝাল, তেল ও অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ানো যাবে না। লেখক : পুষ্টি বিশেষজ্ঞ।
ইত্তেফাক
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন