পিত্তথলির ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে আমাদের দেশে খুব কম। সাধারণত বয়স্ক ও ফর্সা নারীরা এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। ৭৫ শতাংশের ক্ষেত্রে ক্যানসারের সঙ্গে পিত্তথলিতে পানি থাকে। ক্রনিক কলিসিস্টাই ও ক্রনিক কলিলিথিয়াসিস রোগীদের পিত্তথলির ক্যানসার বেশি হয়। যাদের পিত্তথলিতে ক্রনিক টাইফয়েড থাকে, তাদের ক্যানসারের হার সাধারণের চেয়ে ১৬৭ গুণ বেশি। বিনাইন নিত্যপ্লাজম অব গলব্লাডার থেকেও পিত্তথলির ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ক্যানসার পিত্তথলির দেয়াল থেকে তৈরি হয়ে পুরো থলিটি ভরে ওঠে। পিত্তথলির রক্ত সরবরাহ অত্যধিক হওয়ার ফলে এ ক্যানসার খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে দেহের সর্বত্র। এটি পিত্তনালিতে ছড়িয়ে পড়ে পিত্তরসের প্রবাহ বন্ধ করে দিতে পারে। তখন রোগীর জন্ডিস দেখা দেয়। তা ছাড়া লিভার, খাদ্যনালি ও লিস্ফনোডে ছড়িয়ে পড়ে। রোগ ধরা পড়ার সময়ই দেখা যায়, অর্ধেক রোগীর শরীরে ইতোমধ্যে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছে। পিত্তথলির ক্যানসারে পেটের ডান দিকে ব্যথা, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, জন্ডিস ইত্যাদি থাকতে পারে। পেটের ডান দিকে চাকা দেখা দেয়। কখনো কখনো পিত্তথলির পাথর অপারেশনের সময় ঘটনাক্রমে ক্যানসার ধরা পড়তে পারে।আল্ট্রাসনোগ্রাম করলে পিত্তথলিতে টিউমার দেখা যায়। কখনো কখনো এত বড় থাকে যে, পিত্তথলির কোনো আকৃতিই থাকে না। সিটিস্ক্যান করে টিউমার ধরা পড়ে। পিত্তনালি বন্ধ হয়ে গেলে রক্তে অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিসের পরীক্ষাগুলো করানো হয়। পিত্তথলির ক্যানসারে কোনো চিকিৎসাই তেমন ফলপ্রসূ হয় না। বছরে মাত্র ১৮ শতাংশ রোগী বাঁচতে পারেন। শুধু পাথর অপারেশনের সময় যেসব রোগীর পিত্তথলিতে ক্যানসার ধরা পড়ে, তারাই বেশি দিন বেঁচে থাকতে পারেন। পিত্তথলির ক্যানসার প্রতিরোধ করার জন্য পিত্তথলিতে পাথর হলে পিত্তথলি কেটে ফেলে দেওয়াই যুক্তিসঙ্গত।
চিকিৎসা : কেমোথেরাপি (ক্যানসারের ওষুধ দিয়ে) চিকিৎসা ও রেডিওথেরাপিও দেওয়া যেতে পারে। বিস্তারিত জানতে টিউমার ও ক্যানসার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন