ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু সনাতনী ঐতিহ্য যোগব্যায়াম নিয়ে রাজনীতি করাটা নতুন নয়। গতকাল ‘আন্তর্জাতিক ইয়োগা দিবস’ উপলক্ষে উত্তরখণ্ডের দেরাদুনে প্রায় ৫০ হাজার লোকের এক যোগব্যায়াম সমাবেশে নেতৃত্ব দেন তিনি। মোদি মনে করেন, যোগব্যায়াম বিশ্ব ঐক্যের শক্তি। এতে ব্যক্তিগত ও সামাজিক সমস্যার সঠিক সমাধান আছে।
ওই সমাবেশে তিনি বলেন, দেরাদুন থেকে ডাবলিন, সাংহাই থেকে শিকাগো, জাকার্তা থেকে জোহানেসবার্গ– সবখানেই যোগব্যায়াম ছড়িয়ে পড়েছে।
আর পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশই বা বাদ যাবে কেন! এ বছর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে পালিত হয় দিবসটি। ভারতীয় হাইকমিশনের সহায়তায় আয়োজিত আয়োজনে এদিন দশ হাজার লোক যোগব্যায়াম করে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলাসহ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, “দেশে মাদকের ছোবল দেখা দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান নিতে পারে যোগব্যায়াম। যোগব্যায়ামে শরীর ও মন ভালো থাকবে। দুশ্চিন্তা দূর হবে। ঈর্ষা থাকবে না। মানসিক যন্ত্রণা দূর হবে। এসব তথ্য অবশ্য আমি ইন্টারনেটে পেয়েছি।”
কথা হচ্ছে যোগব্যায়াম কতটুকু উপকারী। ভারতীয় দৈনিক ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র এক প্রতিবেদনে যোগব্যায়ামের ভয়াবহ দিকগুলো উঠে এসেছে। এই যোগব্যায়ামের ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। জার্মানির ‘ইউনিভার্সিটি অব ডুইসবার্গ-ইসেন’ এর এক গবেষণার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি উল্লেখ করা হয় একটি জরিপ। যেখানে দেখা যায়–
• ৩৫.৫ শতাংশ যোগব্যায়ামকারীর হাড় ও পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
• ১৮.৪ শতাংশ জনের ক্ষেত্রে স্নায়বিক ব্যবস্থা ক্ষতির শিকার হয়।
• ১১.৮ শতাংশ ক্ষেত্রে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
• ১.৩ শতাংশ যোগব্যায়ামকারী এই যোগব্যায়াম জনিত কোন কারণে মৃত্যুবরণ করে।
যোগব্যায়ামের না হয় কিছু সুফল রয়েছে যা দিবসটি উপলক্ষে এর ধারক এবং বাহকেরা প্রচার করে থাকে। কিন্তু এই ভয়াবহ এবং মারাত্মক ক্ষতির কথা ক’জন জানে। আরও মারাত্মক ব্যাপার হল যোগব্যায়ামের ফলে হওয়া ক্ষতির ৮০.০৩ শতাংশই আর কখনো পুষিয়ে দেয়া সম্ভব হয় না। এছাড়াও ব্যায়ামের সময় ভুল অঙ্গ-সঞ্চালন শারীরিক নানা ক্ষতি সাধন করতে পারে। যা ফ্র্যাকচার বা হাড় ভেঙে যাবার মতো ঘটনার মুখোমুখি করতে পারে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন