মাথাব্যথার ব্যাপারটি বিরক্তিকর হলেও মাঝে মধ্যে মাথাব্যথায় ভোগেন না, এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম।
একেক জনের একেক রকমের মাথাব্যথা হয় এবং এর কারণও থাকে ভিন্ন ভিন্ন। মাথাব্যথা এমনই একটি রোগ যার আসল কারণ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন।
কারণ প্রশ্ন হলো, অতিরিক্ত অর্থাৎ পুরো মাথা ব্যথা, মাথার যে কোনো একদিকে ব্যথা, নাকি হালকা ব্যথা? অন্যদিকে ব্যথার কারণ স্ট্রেস, ভয়, শারীরিক কোনো সমস্যা, বিষন্নতা, ওষুধ সেবন, অ্যালকোহল পান, কম ঘুম, পরীক্ষার চাপ, আবহাওয়া বা তাপমাত্রার ওঠানামা নাকি অন্য কোনো মানসিক সমস্যা, সেটা খুঁজে পাওয়া খুব সহজ নয়।
মাথাব্যথার ভিন্ন ভিন্ন কারণ তুলে ধরা হলো:
নিয়মিত মাথাব্যথা: অনেকের প্রায়ই মাথাব্যথা করে। এই যেমন মাসে ১০-১৫ বার। এই ধরনের মাথাব্যথাকে নিয়মিত মাথাব্যথা বা ক্রনিক মাথাব্যথা বলা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ক্ষেত্রে প্রতিদিনই ওষুধ খাওয়াটা কোনোভাবেই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
খুব বেশি হলে দশবার খাওয়া যেতে পারে। খুঁজে বের করা প্রয়োজন যে রোগী নিয়মিত কোনো ওষুধ সেবন করেন কিনা।
অ্যালার্জি: মাথাব্যথার প্রধানতম কারণ অ্যালার্জি। অ্যালার্জির কারণে স্নায়ুতন্ত্রে ব্লকেজ এর সৃষ্টি হয় ফলে মস্তিষ্কে অতিরিক্ত চাপ পড়ার কারণে মাথায় ব্যথা অনুভূত হয়। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শানুযায়ী অ্যান্টি-হিস্টামিন সেবন করা যেতে পারে।
সাইনোসাইটিস: সাইনোসাইটিস জনিত মাথাব্যথা সাধারণত কপাল জুড়ে, চোখের চারপাশে এবং গালে অনুভূত হয়। অ্যান্টিবায়োটিক এবং স্প্রে জাতীয় ওষুধের মাধ্যমে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
অ্যালার্ম: প্রচণ্ড মানসিক চাপের মূহূর্তগুলোতে আমাদের কপালে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। ডাক্তারি পরিভাষায় যার নাম ‘অ্যালার্ম’। উত্তেজনা কিংবা মানসিক কষ্টের কারণেও এমন হতে পারে। এ ধরনের মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রধান শর্ত চাপ সামলে নিতে শেখা। ‘ব্রিদিং (শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়া) এক্সারসাইজ’ এর বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে। পর্যাপ্ত ঘুমের মাধ্যমেও এ ধরনের ব্যথা দূর করা সম্ভব।
ক্লাস্টার পেইন: প্রচণ্ড যন্ত্রণাদায়ী এই ব্যথা সাধারণত চোখের চারপাশ জুড়ে অনুভূত হয়। এর কারণে চোখে পানি চলে আসা কিংবা নাকের মধ্যে অস্বস্তি হতে পারে। এই ধরনের মাথাব্যথা নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। চিকিৎসকেরা এখনো এর সঠিক কারণ নির্ধারণ করতে না পারলেও বলে থাকেন সাধারণত অ্যালকোহল এবং ধূমপানের প্রভাবে এমনটা হতে পারে। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
মাইগ্রেন: এটি আসলে এক ধরনের বিশেষ বংশানুক্রমিক রোগ। পরিবারের কোনো সদস্যের মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে এটি পরবর্তী প্রজন্মে ছড়ায়। এক্ষেত্রে মাথার যেকোনো একপাশে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। মাইগ্রেনের ব্যথা সাধারণত ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এমন হলে আক্রান্ত ব্যক্তির বমি বমি ভাব কিংবা বমি এবং আলো ও শব্দে অস্বস্তি অনুভব করতে পারেন। সঠিক ওষুধ সেবনের মাধ্যমে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
মানসিক চাপজনিত মাথাব্যথা: মানসিক চাপজনিত কারণে মাথাব্যথা একটি সাধারণ ব্যাধি। সাধারণত পুরো মাথা জুড়ে, কপালের পার্শ্বদেশ এবং ঘাড়ের নিচে এই ব্যথা অনুভূত হয়। মাংসপেশীতে অধিক চাপ, অধিক শারীরিক এবং মানসিক পরিশ্রমের কারণে এই ধরনের মাথাব্যথা অনুভূত হয়। অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকা এবং পরিমিত বিশ্রামের মাধ্যমে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন