চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে পুষ্টি ও নিউট্রিশনের প্রেসক্রিপশন (ব্যবস্থাপত্র) দিয়ে রোগীপ্রতি ১৪ হাজার টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের কনসালটেন্ট পুষ্টিবিদ আয়েশা সিদ্দিকার বিরুদ্ধে এভাবে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা অধিকাংশ স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার বিকেলে মেহেদীবাগ ম্যাক্স হাসপাতালে রোগী দেখেন পুষ্টিবিদ আয়েশা সিদ্দিকা। গত শুক্রবার সকালে রোগীদের প্রথম সাক্ষাতের নাম লেখাতে দুই হাজার টাকা দিতে হয়। আর পুষ্টিবিদ রোগী দেখবেন বিকেলে, সেই সময়ে আরো ১২ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলা হয়। প্রেসক্রিপশনের সঙ্গে একটি খাদ্য তালিকার বই সরবরাহ করা হয়। ভুক্তভোগীরা অধিকাংশ স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জারিন আলম জানান, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে মেহেদীবাগ ম্যাক্স হাসপাতালে যান। সকালে দুই হাজার ও বিকেলে পুষ্টিবিদের সহকারী প্রথমে ১২ হাজার টাকা নেন। এরপর ক্লিনিক্যাল ডায়েট নামে একটি বই পড়তে দেন। বইটি পড়ার পর পুষ্টিবিদ আয়েশা সিদ্দিকা রোগীর ওজন মেপে সাপ্লিমেন্ট দেন। ব্যবস্থাপত্রে লেখা রয়েছে, ব্লোসম টি (Blossom Tea) সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ গরম পানির সঙ্গে লেবু ও মধু মিশিয়ে। প্রিওটিক (Preotic) রাতে খাওয়ার পর একটি করে। লিসি ওমেগা (Lysi Omega) একটি করে রাতে। লিন (Lean) একটি করে চারবার খাওয়ার আগে এবং সয় (soy) পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার জন্য বলা হয়।
জারিন আলম অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রেসক্রিপশন দেওয়ার এক মাস পরে দেখা করার পরামর্শ দেন। পুষ্টিবিদের দেওয়া প্রেসক্রিপশনের সঙ্গে ওষুধগুলো দেওয়া হবে জেনে এত টাকা দিয়েছিলাম। টাকা ফেরত চাইলে টাকা ফেরত দেওয়া হবে না বলে জানান চিকিৎসক।’
এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদ আয়েশা সিদ্দিকার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘রোগীর ওজন নিয়েছি, পরামর্শ দিয়েছি। প্রেসক্রিপশন দিয়েছি। একটা ডায়েট বই দিয়েছি। আমি কি রোগীকে বেঁধে এত টাকা নিয়েছি? সব রোগী থেকে এভাবে টাকা নিই। কেউ তো প্রতিবাদ করে না।’ চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের পরিবার, দৈনিক আজাদীর সম্পাদকের স্ত্রীও তাঁর রোগী বলে জানান তিনি। তিনি দুই বছর ধরে চট্টগ্রামে চেম্বার করছেন। মাসে চারবার আসেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি এস এম নাজের হোসেন জানান, পুষ্টিবিদের এ পরামর্শ দেওয়ার নামে এত টাকা নেওয়া অনৈতিক। একজন পুষ্টিবিদ হাসপাতালের বাইরে চেম্বার করতে পারেন না। স্বাস্থ্য বিভাগের নজরদারি ও দুর্বলতার সুযোগে পুষ্টিবিদরাও চিকিৎসকের মতো চেম্বার খুলে মানুষকে সর্বস্বান্ত করছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন