যখন থেকে যুক্তরাষ্ট্র শেখ হাসিনার সরকারের চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন, জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ, গণতন্ত্র এবং নির্বাচনী ব্যবস্থা ও বিরোধী রাজনৈতিক দলসহ সাংবাদিকদের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার বিরুদ্ধে কথা বলছে, তখন থেকেই প্রায় প্রতিদিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছে শেখ হাসিনা। আর গুম, খুন ও কথিত ক্রসফায়ারের নামে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে হত্যার দায়ে র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর থেকে শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের উপর অতিমাত্রায় ক্ষুব্দ হয়েছে। প্রতিটি সভা সমাবেশেই যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করছেন শেখ হাসিনা।
বিশেষ করে সম্প্রতি আমেরিকা সফর করে আসার পর থেকে শুধু সমালোচনা নয়, শেখ হাসিনা এখন আকারে-ইঙ্গিতে আমেরিকাকে হুমকিও দিচ্ছে। গত দুইদিন আগে তিনি সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ্যে বলেছেন, যে দেশ নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাদের কাছ থেকে কোনো পণ্য আমদানি করবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, সকল অধিদপ্তরকে বলে দিয়েছেন আমেরিকা থেকে কোনো পণ্য না কেনার জন্য।
তবে লক্ষণীয় বিষয় হল-শেখ হাসিনার পণ্য আমাদানি না করার হুমকি ধামকি তিন দিনও টিকল না। সেই আমেরিকা থেকেই আবার ১২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিনি আমদানির ঘোষণা দিয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশের পরই এ নিয়ে নানামুখী আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, শেখ হাসিনা কিছুদিন ধরে পাগলের মতো আচরণ করছেন। তিনি পরিমাপ করতে পারছেন না যে তার ক্ষমতা কতটুকু আর বাইডেনের ক্ষমতা কতটুকু। যুক্তরাষ্ট্র কোনো পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি না করলে তারা না খেয়ে মরবে না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশ থেকে এক মাস গার্মেন্টস পণ্য আমদানি না করে, তাহলে বাংলাদেশের গার্মেন্টস ব্যবসা চাঙ্গে উঠবে। তিন মাসেই হাসিনার রিজার্ভ শেষ হয়ে যাবে।
কেউ কেউ বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশের কোনো নেতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তাহলে এটা শুধু সেই দেশেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। যুক্তরাষ্ট্র মুখ ফিরিয়ে নিলে সাথে সাথে কানাডা, ফ্রান্স, জাপান, জার্মানসহ উন্নত দেশগুলোও হাসিনার দিকে তাকিয়ে থাকবে না। তাদের কাছে হাসিনা কিছুই না। এজন্য হাসিনা বুঝতে পারছে যে পাগলামির ফলাফল ভাল হবে না। তাই নিজের ভুল বুঝতে পেরে দ্রুত যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিনি আমদানির ঘোষণা দিয়েছে। কারণ, শেখ হাসিনা ভাল করেই জানে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাল্লা দিয়ে হাটার মতো ক্ষমতা তার নাই।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন