গাজীপুর শহরের কোনাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতিপ্রার্থী আব্দুর রহমান মাস্টারের বিরুদ্ধে পদের লোভ দেখিয়ে তরুণীকে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার গাজীপুর শহরের শিববাড়ী এলাকায় ইউরো-বাংলা রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী নারী এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘কোনাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতিপ্রার্থী আব্দুর রহমান মাস্টার যুব মহিলা লীগের পদ-পদবির প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করেন। এরপর তিনি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।’ এ ঘটনায় আব্দুর রহমান মাস্টারের দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার এবং তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান ভুক্তভোগী ওই নারী।
গত মাসে কোনাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই নারীর সঙ্গে আব্দুর রহমান মাস্টারের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এ ঘটনার পর সম্মেলন হলেও এখনও থানা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।
সেই ভিডিও প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘কোনাবাড়ী যুব মহিলা লীগের কমিটিতে নেওয়া হবে- এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু আওয়ামী যুব মহিলা লীগের কমিটিতে আমাকে রাখা হয়নি।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা যারা ভিডিওটি দেখেছেন, তাতে দেখবেন আমি স্বেচ্ছায় তার সঙ্গে সম্পর্ক করতে চাইনি। তিনি জোর করে আমার সঙ্গে সম্পর্ক করেছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, ‘আব্দুর রহমান মাস্টার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে আছেন। অনেক বড় নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে। তিনি আমার মতো অনেক নারীকে পদ-পদবীর লোভ দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করতেন। কথা না শুনলে ওনার যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে, আমাদের সেখানে ডেকে নিয়ে জোর করতেন, শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করতেন। তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পেছনে একটি পাঁচতলা ভবন আছে। সেখানে উনি আমার মতো যারা আছে, তাদের নিয়ে যান এবং পদ-পদবীর লোভ দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করেন। এমনকি রাজধানীর উত্তরায় তার যে বাসা আছে, সেখানেও মেয়েদের নিয়ে যান। আমারও যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আমি যাইনি ‘
কোনাবাড়ী থানায় এ ঘটনায় অভিযোগ নেওয়া হয়নি উল্লেখ করে ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমি কোনাবাড়ী থানায় গিয়েছি, কিন্তু পুলিশ আব্দুর রহমান মাস্টারের নাম শোনার পর তাদের ইচ্ছেমতো লিখে একটি জিডি নেয়।’
ভাইরাল হওয়া ভিডিওর বিষয়ে কোনাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বলেন, ‘এমন অনৈতিক কাজ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তবে ব্যক্তি আবদুর রহমান মাস্টারের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দায় আওয়ামী লীগ নেবে না। এর দায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকেই নিতে হবে।’
এ বিষয়ে কোনাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী আবদুর রহমান মাস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এটিকে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন।
গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু সিদ্দিক বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনাদের কাছ থেকে শুনেছি। এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন