ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, সরকার অতিমাত্রায় ভারতপ্রেমী। তাই ভারতের অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করতে পারছে না। ভারতের পানি আগ্রাসন ও সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যার কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
শনিবার (২ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর বাইতুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেইটে গণমিছিল পূর্ব জমায়েতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদসহ ১৫ দফা দাবি আদায়ের দাবিতে এ গণমিছিলের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মিছিলটি বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়, শান্তিনগর মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ মিছিলে বাধা দেয়। পরে মিছিলটি সেখানেই শেষ হয়।
মিছিলপূর্ব সমাবেশে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ভারতে বিজেপি নেত্রী কর্তৃক রাসূল (সা.) এবং উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.)-কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠলেও আমাদের সরকার ভারতের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনতে পারেনি। তাদের কাছে নবীর (সা.) ভালবাসার চেয়েও ভারতের ভালবাসা বেশি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সরকার ভারতের অন্যায্য পানি প্রত্যাহার ও বাঁধ নির্মাণকে যৌথ আলোচনা বা আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে পারেনি। বছরের পর বছর ভারত অব্যাহতভাবে পানি আগ্রাসন চালিয়ে কোটি কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা ধ্বংস করছে, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বিনষ্ট করছে। অথচ সরকার কোনো ধরনের প্রতিকার করতে পারেনি। বরং নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে ভারতীয় পানি আগ্রাসন এখন দেশের মানুষের বাঁচা-মরার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের এই ব্যর্থতা আর মেনে নেয়া যায় না।
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, এই সরকার বিগত এক যুগের বেশি সময় ধরে জনমতকে উপেক্ষা করে ক্ষমতায় জেঁকে বসে আছে।
ভোটাধিকার হরণ করা, খুন-গুম প্রসঙ্গ:
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর বলেন, এই সরকার ভোটাধিকার হরণ, খুন-গুম করে ভিন্নমত দমন করা, উন্নয়নের নামে সীমাহীন লুটতরাজ করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আছে। এরা দেশের তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংস করতে মদসহ মাদকের সয়লাব ঘটাতে মদের লাইসেন্স দিচ্ছে, শিক্ষা থেকে ধর্মীয় শিক্ষাকে সরিয়ে দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি, দলীয় কর্মী তোষণের কারণে দ্রব্যমূল্য জনতার নাগালের বাইরে চলে গেছে। মানুষ দুর্ভিক্ষের আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে আর সরকার উন্নয়ন দেখিয়ে লুটতরাজ সমাপ্তির উৎসব করেছে। সার্বিকভাবে এই সরকার স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন নাগরিকদের সম্মান-সমৃদ্ধি ও সম্ভবনার জন্য বিপদজনক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এই অবস্থা থেকে উদ্ধারের জন্য একটি গণ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নাই।
গণজমায়েতে আরো বক্তব্য রাখেন- দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন প্রমুখ। গণমিছিলে দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বহু মানুষ উপস্থিত হয়েছিল।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন