আব্দুর রউফ। পিতার নাম মৃত. কারী রফিকুল ইসলাম। গ্রাম ফতেপুর পশ্চিমপাড়া। তিনি ২০২১ সাল পর্যন্ত ফতেপুর ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
আব্দুর রউফ বিএনপির দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে গত ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হয়ে ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
বিগত ২০১৬ ও ২০১৭ সালে বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মির্জাপুর থানায় মামলা হয়। চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ ওই মামলায় ৩৮ নম্বর আসামি। তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
২০২১ সালের মার্চ মাসে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার এক বছর পরই তিনি এবার ওই ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। এতে দলীয় অনেক নেতাকর্মীর মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে গত ৯ মে ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. বাহার উদ্দিন আব্দুর রউফকে দলীয় মনোনয়ন না দিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে লিখিত আবেদন করেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ ৩৮ নম্বর আসামি। পরবর্তী সময়ে বিশেষ নেতার পৃষ্ঠপোষকতায় আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ওই সময় কমিটি বাতিলের দাবিতে মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরাবর আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু অদৃশ্য কারণে ওই কমিটি বহাল রয়েছে। নব্য আওয়ামী লীগার বনে যাওয়া হাইব্রিড নেতা আব্দুর রউফ ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রাপ্তির জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। তাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলে এলাকার ত্যাগী নেতা-কর্মী ও আওয়ামী সমর্থক সাধারণ মানুষের মধ্যে নতুন করে অসন্তোষ বৃদ্ধি পাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
তিনি ওই পত্রে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতৃবৃন্দকে মূল্যায়ন এবং দলীয় কর্মকাণ্ডকে গতিশীল করতে নব্য আওয়ামী লীগার ও হাইব্রিড নেতা আব্দুর রউফকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।
ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. বাহার উদ্দিন জানান, আব্দুর রউফকে দলীয় মনোনয়ন না দিতে দলের সভানেত্রীর কাছে আবেদন করেছিলাম। আমি বুড়া হয়ে গেছি। তিনি মনোনয়ন পাওয়াতে আমিসহ দলীয় নেতাকর্মীরা হতাশ হয়েছি। তবে তৃণমূল পর্যায়ে দলের ক্ষতি হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ফতেপুর ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া আব্দুর রউফ জানান, এক সময় বিএনপি করতাম। আমার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল। তবে সে মামলা শেষ হয়ে গেছে বলে দাবি করেন।
মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ জানান, দল আব্দুর রউফকে মনোনয়ন দিয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীরা তার পক্ষে কাজ করবেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন। যারা কাজ করবেন না তারা দলের কেউ না। তবে কারো যদি কোনো অভিযোগ থাকে এখনো সময় আছে নেত্রীর কাছে জানাতে পারবেন বলে জানান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন