বিতর্কের মুখেই জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে নির্বাচন কমিশন গঠন আইন। তবে এই আইন পাস হলেও তা আমলে নিচ্ছে না রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি। উল্টো নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠায় দাবি আদায়ের পথেই হাঁটছে দলটি। এ দাবি আদায়ে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৃহৎ ঐক্য গড়তে চায় বিএনপি।
নির্বাচন কমিশন গঠন আইন পাসের দিনই তা প্রত্যাখ্যান করে নতুন করে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের নীতিনির্ধারকরা। সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে ‘এক দফা’ কঠোর আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি চলছে। সে লক্ষ্যে বাম, ডান ও ইসলামপন্থি কয়েকটি দলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছে বিএনপি। বৃহৎ ঐক্যের বিষয়টি মাথায় রেখে দ্রুতই এসব দলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।
এ নিয়ে শুক্রবার রাতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি বৈঠক করেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকেই বৃহৎ ঐক্য গঠনের সিদ্ধান্ত আসে বলে জানিয়েছেন স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য।
এদিকে বৈঠকে অংশ নেয়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করে আসছে বিএনপি। এজন্য বৃহত্তর জোট গঠনের জন্য চেষ্টা চলছিলো। তবে সম্প্রতি সরকারের ইচ্ছামতো নির্বাচন কমিশন গঠন আইন পাসের পর বিএনপি নতুন করে ভাবছে। তারই প্রেক্ষিতে খুব দ্রুত সময়ে বৃহৎ ঐক্য গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ সরকার ফের বিগত নির্বাচনের মতো একতরফা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন এমন পরিস্থিতির মধ্যে আর সরকারকে সময় দেয়া যাবে না। এক দফা নিয়ে নতুন করে আন্দোলনে নামা ছাড়া বিকল্প নেই। এজন্য সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বৃহত্তর জোট গঠন হবে।
সূত্র জানায়, বিএনপি কৌশলগত কারণে নানা পন্থায় এ বৃহৎ ঐক্য গঠন করবে। তবে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা হবে না। সবাইকে এক দফা নিয়েই সবার সঙ্গে আলোচনা করবে। এদিকে ২০দলীয় জোট এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না দিয়েই সরকারকে নিষ্ক্রিয় করে দেবে বিএনপি। ২০ দলীয় জোটের অন্যতম দল জামায়াতে ইসলামীকেও নিয়েও নতুন করে ভাবা হচ্ছে। এ ছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্য দল এবং রাজপথে কর্মী-সমর্থক থাকা দলগুলোর সঙ্গে শিগগিরই আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করার নির্দেশনা দিয়েছেন তারেক রহমান। সেই সঙ্গে স্থায়ী কমিটির চারজন নেতাকে সমমনা দলের সঙ্গে যোগাযোগ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দায়িত্ব পাওয়া নেতারা ওইসব নেতাকে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের দিন-তারিখ চূূড়ান্ত করবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একজন নেতা বলেন, শুক্রবার রাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ বিষয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আর যে যেখানে আছেন, তাদের সবার সঙ্গে এক দফা নিয়ে আলোচনা করেই বৃহত্তর জোট গঠন করা হবে। কাউকে বাদ দেয়া হবে না। যে যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখবেন এ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন