জাতীয় সংসদে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে যে আইন পাস হয়েছে, তাতে জনমতের প্রতিফলন ঘটবে না।
শনিবার নির্বাচন কমিশন আইন ও চলমান পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেছে গণঅধিকার পরিষদ।
সকালে রাজধানীর বিজয়নগরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান দলের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দলের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, ফারুক হাসান, সোহরাব হোসেন, শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ফাহিম, যুগ্ম সদস্যসচিব আতাউল্লাহ, আব্দুজ জাহের, ফাতেমা তাসনিম, নাজমুল হুদা প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে গণ অধিকার পরিষদ দেশের চলমান রাজনৈতিক ও নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে সংকট নিরসনে সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ ও সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনরায় অন্তর্ভুক্তি করার দাবি জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান সরকারের সময়ে ‘সার্চ কমিটি’র মাধ্যমে গঠিত বিগত দুটি নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থ হয়েছে। এর মাধ্যমে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে যে, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। রাজনৈতিক নেতাদের ঐকমত্য ব্যতীত নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলে তাতে জনমতের চাওয়া প্রতিফলিত হবে না; বরং বিগত বিতর্কিত দুটি কমিশনের মতোই হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, বিগত দুটি বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন গঠনের দায়মুক্তির বিধান রেখে, নির্বাচন কমিশন গঠনে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাংসদ ও রাজনৈতিক নেতাদের মতামতের কোনো সুযোগ না রেখে সরকারি দলের পছন্দমতো নির্বাচন কমিশন গঠনের নিমিত্তে যে আইন পাস করা হয়েছে, তা নির্বাচনী সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে। এ ধরনের গণবিরোধী আইনকে গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত বলে মনে করে গণ অধিকার পরিষদ। তাই নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক ঐকমত্যকে গুরুত্ব দিতে হবে।
গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া বলেন, বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দেশ-বিদেশে সমালোচনা চলছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান সবার সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আমাদের দেশে ভিন্ন। এর কারণে সাধারণ মানুষও বিপদে পড়বে।
রেজা কিবরিয়া আরও বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, অনেক সময় লাগবে। কিন্তু হুট করে ১০ দিনের মধ্যে আইন করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে দলটির নেতারা বলেন, ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী গণতন্ত্র ও স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ অনস্বীকার্য। কিন্তু নতুন আইনটিতে সাংসদ ও রাজনৈতিক নেতাদের মতামতের সুযোগ না রেখে শুধু সরকারি দল এবং তাদের নিয়োগকৃত কতিপয় ব্যক্তির মতামতের বিধান রাখা হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন