নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সরকারের আইন প্রণয়নের উদ্যোগ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এতদিন বিনা কাবিনে সংসার করছেন, এখন কাবিন করা হলো।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, সুচিকিৎসা এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও ন্যায়বিচারের দাবিতে জিয়া নাগরিক ফোরাম এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘কিছুদিন আগে নির্বাচন কমিশন আইন নিয়ে কিছু বিলাপ-প্রলাপ হলো। পরে সরকারি দলই আইনের প্রস্তাব করলো। মাঝখানে আইনমন্ত্রী বললেন, আইন তো জটিল ব্যবস্থা; এত তাড়াতাড়ি করা যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘এখন শুধু আইন না, ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশন যা যা করেছে, তার সবকিছুর বৈধতাও দিয়েছে এই আইনের মাধ্যমে। কিন্তু তারা এতদিন যা করছেন তা বেআইনি। এখন একটা আইনি প্রলেপ দেওয়া হলো। অর্থাৎ এতদিন বিনা কাবিনে সংসার করছেন, এখন কাবিন করা হলো।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এ নেতা বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জকে তারা উদাহরণ সৃষ্টি করতে চান। তারা মনে করেন নারায়ণগঞ্জে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। আমার একটা কথা মনে হয়, এই সরকারের নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়- এই কথা শুনলে পশুপাখি, জানোয়ারও বিব্রত বোধ করে।’
‘সরকার বিব্রতবোধ করে না কেন? আগামী নির্বাচনের আগেই এই ইভিএম মেশিন বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়া হবে’ যোগ করেন তিনি।
গয়েশ্বর চন্দ্র আরও বলেন, ‘করোনাকে সরকার যখন রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে নেয়, তখন তো এটার বিরুদ্ধে আমাদের কথা বলতে হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সুচিকিৎসার দাবিতে যেভাবে সারাদেশে গণজোয়ার শুরু হয়েছে, তাতে সরকার বিধিনিষেধ, ১৪৪ ধারা দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার ভীত-সন্ত্রস্ত। বিএনপির শক্তি সরকার পরিমাপ করতে পেরেছে। সরকার যে জনরোষে পড়েছে তা মোকাবেলা করতেই করোনাকে আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহার করেছে। শতকরা ৮০ ভাগ জনগণ মনে করে, এই বিধিনিষেধ রাজনৈতিক আন্দোলন মোকাবিলা করার জন্য দেওয়া হয়েছে, জনস্বাস্থ্য বিবেচনা করে নয়।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘আমাদের একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আছেন, তিনি বলেছেন আমেরিকায় লক্ষাধিক লোক প্রতিবছর নিখোঁজ হয়। আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলবো- বাংলাদেশের অপকর্মের জন্য যদি আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে আর আপনি যখন নিশ্চিত আমেরিকাতে এ রকম ঘটনা ঘটে, তাহলে বাংলাদেশের পক্ষে আমেরিকাকে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছি না কেন?’
এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা বিদেশে চলে যায়, রিজার্ভ চুরি হয়। আজ পর্যন্ত কেউ ধরা পড়ে না। এই সরকার রিজার্ভ চুরির সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত না হলে কাউকে ধরার চেষ্টা করে না কেন?
জিয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি লায়ন মিয়া মো. আনোয়ারের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন