ভোলায় করোনাভাইরাস প্রতিষেধক টিকা না নিলে ইউনিয়ন পরিষদের সুফলভোগীদের সরকারি সুবিধা ( ভিজিএফ, ভিজিডি, দরিদ্র ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা, জেলে চালসহ অন্যান্য) স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন দুই ইউপি চেয়ারম্যান।
তারা হচ্ছেন- জেলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগ সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক জহুরুল ইসলাম নকিব ও শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়াম্যান জেলা আওয়ামী লীগ কোষাধ্যক্ষ মো. জসিম উদ্দিন। ওই দুই ইউপি চেয়ারম্যান নদীপাড়সহ ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে মাইকিং করে এমন প্রচারণা চালান।
বুধবার ইউপি চেয়ারম্যান নকিব জানান, ভোলা জেলায় করোনাভাইরাসের আক্রান্ত সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে কঠোর সিদ্ধান্ত ছাড়া উপায় ছিল না। ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৮২ জন। মারা যাচ্ছেন ৫ থেকে ৭ জন করে। ভোলায় প্রতিদিনের এমন অবস্থায় এলাকার মানুষকে নিরাপদ রাখতে তারা প্রথমে মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য প্রচারণা চালান।
এখন শতভাগ টিকা নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। এমনকি টিকার জন্য বিনা টাকায় রেজিস্ট্রেশন কর্মসূচিও শুরু করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্রে ওই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
সমুদ্রগামী ৮শ জেলের জন্য প্রাপ্ত ২৪ টন ৯শ কেজি চালের বরাদ্দ পেলেও টিকা না নেওয়ায় বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। টিকা নেওয়ার পরই ওই জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণ করা হবে।
এলাকার জেলে মাকসুদুর রহমান, মফিউদ্দিন, আনিসুর রহমান, রহিজল জানান, চেয়ারম্যানের এমন উদ্যোগে তারা খুশি। এমন উদ্যোগ না নিয়ে তারা টিকার জন্য আগ্রহী হতেন না। জেলেরা নদীতে মাছ ধরা ও মাছ বিক্রি নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। এরা এখন টিকা নিতে আসবেন।
কাচিয়া ইউনিয়ন এলাকায় সরকারের সুবিধা প্রদান কার্যক্রমের তদারকি কর্মকর্তা সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও) মো. আবু তাহের এমন ঘোষণাকে স্বাগত জানান।
এমন উদ্যোগ সব ইউনিয়নে করার আহবান জানান জেলার নাগরিক কমিটির সভাপতি মো. আবু তাহের ও ওই সংগঠনের সহ-সভাপতি প্রফেসর দুলাল চন্দ্র ঘোষ। কাচিয়া ইউনিয়নে ১৯শ জেলে ৪ মাস ৪০ কেজি হারে চালের সুবিধা পান। এছাড়া সমুদ্রগামী ৮০০ জেলের জন্য ইতিমধ্যে ২৪ টন ৯শ কেজি চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। টিকা নেওয়ার পরই এদের চাল দেয়া হবে।
এছাড়া দুই বছরের জন্য মাসে ৩০ কেজি হারে ১২০ পরিবার ভিজিডি চাল পেয়ে থাকে। হতদরিদ্রদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সহায়তা ১০ কেজি হারে চাল পাচ্ছেন এক হাজার ৪শ পরিবার। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা, প্রতিবন্ধীভাতার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকেই তালিকা প্রদান করা হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার পরিবার সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরকারের সুবিধা ভোগ করে থাকে।
ওই সব পরিবারকে টিকা নেওয়ার বিষয় নিশ্চিত করা গেলে সরকারের গণটিকা কার্যক্রম সফল হবে বলেও জানান ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম নকিব ও মো. জসিম উদ্দিন।
জসিম উদ্দিন জানান, ৭ তারিখ থেকে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হবে। তার আগেই তারা টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করেন সাধারণ মানুষকে। আলীনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. বশির আহম্মদও জানান একই কথা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন