বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দিতে সমস্যা কী, এতো অসুবিধা কীসের- এমন প্রশ্ন তুলেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
রবিবার (০৯ মে) টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা ভাসানীর মাজার জিয়ারত শেষে দুস্থদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণের আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. জাফারুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘ওনার (বেগম খালেদা জিয়া) যে অবস্থা তাতে ওনার চিকিৎসা প্রয়োজন। তিনি অসুস্থ এবং লাঞ্চে পানি আসা এটা খুব খারাপ লক্ষণ। যেকোনও সময় যেকোনও কিছু হতে পারে। তাছাড়া আমাদের প্রেসিডেন্ট সাহেব সর্দি-কাশি হলে চিকিৎসার জন্য বাইরে যান, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও বাহিরে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাহলে তিনি (খালেদা জিয়া) যদি বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে চান সেই সুযোগ দেয়া উচিৎ। তবে আমি মনে করি, ওনাকে (খালেদা জিয়া) নিয়ে যে চালাচালি করছে সেটাতে ওনার জন্য, দেশের জন্য পুরো জাতির জন্য একটি বিপদজ্জনক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিতে যেতে দেবে কি দেবে না, সে সিদ্ধান্ত নেয়া তো আইনমন্ত্রীর কাছে আধা ঘণ্টার ব্যাপার।’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আজকে তাকে (খালেদা জিয়া) জামিন দিতে এতো অসুবিধা কিসের? আমি মনে করি এই নিয়ে তর্ক-বিতর্ক না করে মানবতার কারণে, দেশের জন্য, সবার জন্য আজকেই বেগম জিয়াকে বলে দেয়া উচিত, আপনার যেখানে ইচ্ছা সেখানে গিয়ে চিকিৎসা নেন এবং আমাদের সবার উচিত হবে খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করা।’
মোদীবিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতারকৃত ছাত্রদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘তারা (ছাত্ররা) মোদীর বিরুদ্ধে কথা বলেছে। এজন্য তাদের আটক রাখবে? আমি মনে করি মানবিক কারণে, আজকে মানবতার খাতিরে এই যে একটি রোগ ছড়িয়ে পড়ছে জেলখানায়, এজন্য যারা শুধুমাত্র খুনি, যারা মানবতাকে খুন করেছে তাদের ছাড়া সবাইকে জামিন দিয়ে দেয়া হোক। যারা খুন করেছে, লুট করেছে তারাতো দিব্যি বাহিরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দেশ একটি বিপর্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে। যেভাবে গত কয়েকদিন দেখছেন তাতে রোগ আরও বাড়বে। বড় লোকেরা প্লেনে যেতে পারবে, তারা নিজেদের গাড়িতে যেতে পারবে। কিন্তু সাধারণ মানুষ বছরে একটা দিন ঈদ করতে পারবে না, এটা হতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘রোগ বাড়তে পারে, এজন্য অনেক সহজ উপায় ছিলো। পরিষ্কারভাবে বলা হচ্ছে যারা বাড়িতে যাবেন অনুগ্রহপূর্বক একদিন আগে রোগটা পরীক্ষা করে নিন। তারা (সরকার) রোগে কম মৃত্যু দেখানোর জন্য কম পরীক্ষা করছে।’
ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আজকে এই সময়ে দেশ যারা চালাচ্ছেন তাদেরকে ‘ধমক’ দিয়ে কথা বলার একটিমাত্র মানুষ ছিলেন। তিনি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। উনাকে স্মরণ করলেই এই জাতি নিভৃত থাকবে, ভালোভাবে বেঁচে থাকবে। উনার যে বক্তব্য “কেউ খাবে, কেউ খাবে না- তা হবে না তা হবে না”। তাই আমরা মনে করি আজকে সাধারণ মানুষ ঈদ করবে, যাদের ঘাড়ে ভর করে এই জাতি টিকে আছে, যাদের কারণে আমাদের উৎপাদন হয়, কলকারখানা চলে তাদের দুঃখে-কষ্টে এটা চলতে পারে না, এটা অন্যায়। এই অন্যায় অবিচারের জন্য আমাদের সকলকে সম্মিলিতভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে ঈদের পূর্বে আপনাদের জন্য আমাদের ভাসানী অনুসারী পরিষদের সামান্য একটু প্রচেষ্টা। এই সংগঠন খুব বড় নয়। এই ঈদের সময় যেন আপনারা একটু রুটি খেতে পারেন, একটু সেমাই খেতে পারেন এবং পরবর্তী কয়েকটা দিন পুরো পরিবার খাবার নিয়ে খেতে পারেন সেটার একটা ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের চেষ্টা থাকবে আপনাদের ভালোভাবে চালানোর। আমাদের ব্যর্থতা যে আমরা আপনাদের ভালোভাবে ঈদ করার সুযোগ করে দিতে পারিনি।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, প্রেসিডিয়াম মেম্বার নঈম জাহাঙ্গীর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, মুক্তিযোদ্ধা কবি বুলবুল খান মাহবুব, ভাসাষানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম মেম্বার এরফানুল বারী, ভাসানী অনুসারী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফরিদ উদ্দিন, টাঙ্গাইল জেলা ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি আব্দুল হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক হেদায়েত উল্লাহ খান শোভা প্রমুখ।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন