৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান যে ভাষণ দিয়েছেন সেটা স্বাধীনতার ঘোষণা নয়, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা না, সেটি একটি ভাষণ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
রবিবার (৭ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ৭ মার্চ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদারদের গণহত্যার পরে মানুষ যখন ঢাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে, তখন আমরা শুনলাম স্বাধীনতার ঘোষণা হচ্ছে। একজন মেজর স্বাধীনতার ঘোষণা করছে। আমরা ট্রানজিস্টারের কাছে গেলাম এবং শুনলাম একজন মেজর স্বাধীনতার ঘোষণা করছে। তিনি বলছেন, আমি মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা করলাম। এটা হলো স্বাধীনতার ঘোষণা। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা। ৭ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা না। ৭ মার্চের ভাষণ যে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা না, তা এই দিবস আসলেই বোঝা যায়।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘৭ মার্চ দুপুরে জনসভা। জনসভাস্থলে মানুষের কানায় কানায় ভর্তি। সবার আশা আজ স্বাধীনতার ঘোষণা আসবে। শেখ মুজিবুর সাহেব বক্তব্য শুরু করলেন। ওনার প্রতিটা সেন্টেন্স এ জনগণ উত্তেজিত, এই বুঝি স্বাধীনতার ঘোষণা আসবে। কিন্তু ভাষণে যে স্বাধীনতার ঘোষণা টা সেটা জনগণ পায়নি।’
তিনি বলেন, ‘সেদিন (৭ মার্চ) দেশের বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টে বাঙালি সৈনিকরা আলোচনা করেছে, স্বাধীনতার ঘোষণা আসলে কি করবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তিনি তখন মেজর। চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে ওনার (জিয়ার) সুফেরিয়ার ব্রিগেডিয়ার মজুমদার তাকে এবং যারা বাঙালি সৈনিক ছিল, তাদের সাথে করে নিয়ে আলোচনা করে স্বাধীনতার ঘোষণা আসলে কি করবে। ব্রিগেডিয়ার মজুমদার শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে আলোচনা করলেন শেখ মুজিবুর জানালেন, আমার কোনও নির্দেশনা নাই। তোমরা অপেক্ষা করো।’
টুকু বলেন, ‘তারপরের দিন আওয়ামী লীগ থেকে প্রেস কোট দেয়া হলো। সেই প্রেস কোটে তাজউদ্দিন সাহেব স্বাক্ষর করলেন। এবং সেখানে বলা হলো বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য। সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ক্ষমতায় আসার জন্য এই ভাষণ (৭মার্চ ভাষণ) দেয়া হয়েছে। তাহলে সেটা যে স্বাধীনতার ঘোষণা না আওয়ামী লীগের সেই প্রেস কোট এ বুঝা গেল। আজকের এই দিনে এটাকে ৭ মার্চের ভাষণ বলা হচ্ছে। এটাকে স্বাধীনতার ঘোষণা বলা হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণা আর ভাষণ এক জিনিস না। যদি ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা হতো, তাহলে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বললেন আমি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হিসাবে স্বাধীনতার ঘোষণা করলাম। যদি ওনারা স্বাধীনতার ঘোষণা আগেই দিয়ে থাকেন, তাহলে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা নতুন করে স্ক্রিপ্ট পাঠিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ঘোষণা করালেন কেন? এই প্রশ্নের উত্তর থাকতে হবে।’
টুকু বলেন, ‘যদি ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা হয়ে থাকে তাহলে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জিয়াউর রহমানের ঘোষণার পরে নতুন করে শেখ মুজিবুর রহমানের নামে আবার ঘোষণা করালেন কেন?’
‘৭ মার্চ জনসভায় জনগণ খুব আশা নিয়ে গিয়েছিল কিন্তু স্বাধীনতার ঘোষণা পায় নাই’- যোগ করেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনিপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও বেগম সেলিমা রহমান প্রমুখ।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন