আওয়ামী লীগ সরকারের নানা অব্যবস্থাপনার কথা উল্লেখ করে গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে দেশ এখন দুঃশাসন ও দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। জনগণের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এখন সামনে অগ্রসর হওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এই রাজনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও অর্থনৈতিক লুণ্ঠনের প্রতিবাদে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
শনিবার (৬ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান তিনি।
ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশের আজকে কি অবস্থা তা সম্পর্কে আপনার অবগত আছেন। সব রকমের সমস্যা আজ সংকট আকারে ধারণ করেছে। এই সংকট থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আমাদের ঐক্যের প্রয়োজন আছে। সংকট উত্তরণে জনগণকে ঐক্যমতে আসতে হবে। যাতে সরকার বাধ্য হয় এসব জিনিসগুলো থেকে সরে দাঁড়াতে। এই অবস্থা বিরাজ করলে এখানে আমাদের সুশাসন পাওয়ার কোনও উপায় থাকবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা যদি মাঠে না নামি তাহলে এর থেকে উত্তরণ ঘটবে না।
প্রেস ক্লাবের সামনেই গণফোরামের আরেক অংশের কর্মসূচি প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন বলেন, দল থেকে বের হয়ে হয়তো আরেকপক্ষ আরেক বক্তব্য রাখতে পারে। আমার দল আমি মনে করি সঠিকভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছে, কাজ করে যাবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাদ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিজিটাল আইনের কথা বলে আমাদের যেভাবে বাকস্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে তার থেকে মুক্তি দিতে হবে।
কামাল হোসেনের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী করোনা তাণ্ডবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে গণফোরামের স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্থ হয়েছে। বর্তমানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা গণফোরামের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড জোরদার করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, এখন থেকে আমরা সারা বাংলাদেশে আমাদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব। গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও দুর্নীতিমুক্ত জনপ্রশাসনের মাধ্যমে জনগণের অর্থনৈতিক রাজনৈতিক অধিকার সমূহ নিশ্চিত করার স্বপ্ন নিয়ে জনগণ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান স্বাধীনতা অর্জন করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছরেও জনগণের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে অর্জন করতে পারে নাই। গত অর্ধশতাব্দিতে আমাদের অনেক অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে এবং মাথা পিছু আয় বেড়েছে, কিন্তু বৈষম্য কমেনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, একটি চক্রের মাধ্যমে ব্যাংক লুঠপাঠ, শেয়ার বাজার ধ্বংস এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের টাকা আত্মসাত করে এবং জনগণকে বঞ্চিত করে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। যখন আইন প্রণয়নে ও আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ অনুপস্থিত থাকে তখনই রাষ্ট্রের মালিক জনগণ অসহায় হয়ে পড়ে। তাদের প্রতি জনগণের আস্থা, বিশ্বাস ও সমর্থন নেই। জনবিচ্ছিন্ন এ সরকার জনগণকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার অপকৌশল হিসেবে বিভিন্ন কালা কানুন জারি করেছে।
গণফোরাম জানায়, ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে ও দুই লক্ষ নির্যাতিত মা বোনের ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা আজ নতজানু নীতি গ্রহণ করেছে। আজ গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পরিবর্তে দুর্নীতি ও দুঃশাসনের স্বর্গরাজ্য গড়ে উঠেছে। জনগণের পিঠ আজ দেওয়ালে ঠেকেছে। সামনে অগ্রসর হওয়া ছাড়া জনগণের আর কোন বিকল্প নেই।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন