বগুড়ায় দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে পৌরসভায় মেয়র পদে নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় পৌর আওয়ামী লীগের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্য আব্দুল মান্নান আকন্দকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন এবং সাধারণ সম্পাদক নৌকার প্রার্থী আবু ওবায়দুল হাসান ববি এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল মান্নান আকন্দকে সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে দলীয় পদ ও প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনও সম্পর্ক নেই। দলীয় নেতাকর্মীদের মান্নানের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ এ নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ওবায়দুল হাসান ববিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। নির্বাচনে পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমানে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল মান্নান আকন্দ বিদ্রোহী প্রার্থী হন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জগ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দল থেকে অব্যাহতির বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে আব্দুল মান্নান আকন্দ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তাছাড়া কোনো সভা না করে এককভাবে কাউকে অব্যাহতি দেওয়া যায় না। আমি বঙ্গবন্ধুর একজন সৈনিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। মেয়র পদে আমার নির্বাচন করার ইচ্ছা বহু দিনের। যেহেতু আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা উচিত নয়, তাই আমি আমার দলের কাছে মনোনয়ন চাইনি। আমি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তেই প্রার্থী হয়েছি।
আওয়ামী লীগ বগুড়া পৌর কমিটির সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন জানান, আব্দুল মান্নান আকন্দ দলের সদস্য হয়েও পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাছাড়া তিনি নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে আওয়ামী লীগের সিনিয়র একাদিক নেতাকে গালিগালাজ করেছেন।
তিনি বলেন, আব্দুল মান্নান আকন্দের এসব কর্মকাণ্ডের কথা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জানানো হয়। পরে কেন্দ্রের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে পৌর আওয়ামী লীগের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মান্নান সমর্থকরা জানান, আবু ওবায়দুল হাসান ববি দলীয় প্রার্থী হলেও আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল অনেক নেতা তার বিপক্ষে কাজ করছেন। কোনও কোনও নেতা ব্যক্তিস্বার্থে ধানের শীষের প্রার্থী রেজাউল করিম বাদশার জন্য ভোট চাইছেন। ভোট সংগ্রহে বাড়ি বাড়ি লোক পাঠানো হচ্ছে। অথচ সংগঠন এসব ছদ্মবেশীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে প্রতিহিংসার কারণে আবদুল মান্নানকে অবৈধভাবে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তারা মনে করেন, এ অব্যাহতির কারণে মান্নানের নির্বাচনে ফলাফল আরও ভালো হবে।
পূর্বপশ্চিমবিডি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন