কুষ্টিয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে ভাস্কর্যের পাশে গুলির ঘটনাও ঘটেছে।
শনিবার সন্ধ্যায় বের হওয়া একটি বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছে বিএনপি।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি মেহেদী আহমেদ রুমি বলেন, ‘ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদের দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করে চলেছে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল।’
সরেজমিন দেখা গেছে, সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন দল ও গ্রুপভিত্তিক লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মোটরসাইকেল মহড়া দিচ্ছে। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তা অব্যাহত আছে।
এছাড়া ঘটনাস্থল শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে ভাস্কর্যের পাশে পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যে বিক্ষোভ চলাকালে সেখান থেকে কে বা কারা কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে নিশ্চিত করেছে।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি এসএম নাহিদুল ইসলাম বিপিএম জানান, ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের খুঁজে বের করা হবে।
তিনি বলেন, ভাস্কর্য তৈরির উদ্যোক্তা কুষ্টিয়া পৌর কর্তৃপক্ষ মামলা করার কথা। তারা না করলে পুলিশ নিজ উদ্যোগে মামলা করবে এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ইতোমধ্যে সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে পুলিশ।
এর আগে শুক্রবার রাতের আঁধারে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ওই ভাস্কর্যের ডান হাত, পুরো মুখমণ্ডল ও বাঁ-হাতের অংশ বিশেষ ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার সকালে বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হলে শহরের বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেট চত্বর ও থানা মোড়ে আওয়ামী লীগ ও জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিক্ষোভ সমাবেশ, মিছিল ও মানববন্ধন করে।
কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পৌর মেয়র আনোয়ার আলী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি সমাজ ও রাষ্ট্রের নানা স্তরে ঘাপটি মেরে আছে। এরা সুযোগ পেলেই হিংস্র ছোবল মারে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে বিজয়ের মাসে ওরা ওদের আস্ফালনের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে।
কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধী পরাজিত শক্তি বিজয়ের মাসে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের স্পর্ধা দেখিয়েছে। এমন কাপুরুষোচিত নোংরা কাজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভির আরাফাত জানান, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন