আয়োজক সংগঠন স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ইলিশ উৎসব করায় এবং সেই উৎসবে অংশগ্রহণ করে যাওয়ার পর মুন্সীগঞ্জের দুই সংসদ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
করোনা টেস্ট করার পর মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি ও মুন্সীগঞ্জ সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাসের করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি সোমবার জাতীয় সংসদ ভবন হাসপাতালে নিয়মিত চেকআপের অংশ হিসেবে করোনা বুথে নমুনা দেন।
সম্পর্কিত খবর
এমপি সাহাদারা মান্নান করোনায় আক্রান্ত
করোনায় ২৪ ঘণ্টায় ৩৮ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ২১৯৮
শিক্ষক নিবন্ধন: করোনা আক্রান্ত প্রার্থী পরবর্তীতে ভাইভা দেয়ার সুযোগ পাবেন
গত মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। একইদিন অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস ঢাকার একটি বেসরকারি হসপিটালে করোনার নমুনা দেন এবং মঙ্গলবার তার করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে।
এরমধ্যে সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস ঢাকার ধানধন্ডির তার বাসভবনে এবং সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি ঢাকার ঢাকার ইউনাইটেড হাতপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে, দুই সংসদ সদস্যই শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।
সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কন্তি দাসের ভাতিজা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-উপ আইন বিষয়ক সম্পাদক আপন দাস বলেছেন, তার চাচা সুস্থ আছেন। বেসরকারি পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এলেও সরকারিভাবে আরেকটি করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তিনি সবার দোয়া চেয়েছেন।
জানা গেছে, গত শুক্রবার দিনব্যাপী শিমুলিয়া ঘাটের নদী বন্দর মাঠে ইলিশ উৎসবের আয়োজন করা হয়। প্রজন্ম বিক্রমপুরের আয়োজনে ও ব্যাংক এশিয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় ৩৪টি স্টল বসিয়ে পদ্মা নদীর ইলিশসহ বিভিন্ন জাতের মাছ নিয়ে ক্রয়-বিক্রয়ে ইলিশ উৎসব মেলায় পরিণত হয়। এসময় দর্শনার্থীরা পদ্মার ইলিশ ক্রয়সহ স্টল থেকে ইলিশ ভাজা খেয়ে আনন্দ উপভোগ করেন। আহ্বায়ক মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বলের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ব্যারিস্টার শিমুল কিবরিয়ার সঞ্চালনায় বেলুন উড়িয়ে ইলিশ উৎসবের র্যালির উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ।
আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। উদ্বোধকের বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস।
এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সানজিদা খানম, জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার, পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন, ব্যাংক এশিয়ার এমডি আরফান আলী, সিরাজদিখান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহম্মেদ, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল। সভায় স্বাগত ভাষণ দেন প্রজন্ম বিক্রমপুরের নির্বাহী কমিটির সদস্য বলরাম বাহাদুর।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি ওমর ফারুক, বাসসের সাবেক এমডি ও বাংলাদেশ খবরের সম্পাদক মো. আজিজুল ইসলাম ভুইয়া, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হুমায়ুন কবীর, দৈনিক যুগান্তরের উপ-সম্পাদক এহসানুল হক বাবু, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য মো. মামুনুর রশিদ, দৈনিক জনকণ্ঠের মফস্বল সম্পাদক মীর লিয়াকত আলী প্রমুখ।
পরে বাউল সঙ্গীতের আসর বসে। এখানে শাহ আলম সরকার ও কাঙাল রশীদ ও তার দল গান গেয়ে দর্শক মাতান। রাত অবধি চলে বাউল গানের আসর। বাউল আসরের সঞ্চালনায় ছিলেন তাপস কুমার দাস। এই করোনাকালে সরকারের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ব্যাপক লোক সমাগম ঘটিয়ে এরকম উৎসব নিয়ে সমালোচনার বইছে নানা মহলে। স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকর্মীও এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। এই উৎসবে অংশ গ্রহণের পর দুই সংসদ সদস্যের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসায় উৎসবে অংশগ্রহণ করা অনেকের মধ্যে করোনা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এদিকে, মুন্সীগঞ্জের দুই সংসদ সদস্যের রোগমুক্তিতে সবার দোয়া প্রার্থনা করেছেন তাদের স্বজন এবং দলের নেতাকর্মীরা। মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রাসেল মাহমুদ বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে এই রকম উৎসব অনুষ্ঠানে প্রশাসনের অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিলো। এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা দরকার ছিলো।
পূর্বপশ্চিমবিডি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন