রংপুরে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী স্ত্রী সন্তান ছাড়াই পালিত হয়েছে। এতে রংপুরের সাধারণ মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জন্ম নিয়েছে।
মঙ্গলবার ছিল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাস্ট্রপতি আলহাজ্ব হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী। এ উপলক্ষে রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে।
মঙ্গলবার সকাল এগারোটায় রংপুরের পল্লী নিবাসে সমাধি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান দলের বর্তমান চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধি দলীয় উপনেতা জিএম কাদের। ঢাকা থেকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ও সংসদ সদস্যরা সকালে পল্লী নিবাসে পৌঁছে এরশাদের সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন ও কোরআন তেলোয়াত করেন। পরে পার্টির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের সাথে নিয়ে এরশাদের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন জানিয়ে এরশাদ ও তার পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মোনাজাত করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় সংসদের বিরোধি দলীয় চীফ হুইফ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, অতিরিক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, যুগ্ম মহাসচিব এসএম ইয়াসির, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি কাজলী বেগম, সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদার রহমান মিলনসহ জাতীয় পার্টি ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
এ সময় এরশাদ পরিবারের ভাই জিএম কাদের ছাড়া অন্য কোন সদস্যকে দেখা যায়নি সেখানে। তার সহধর্মিণী রওশন এরশাদ, তার পুত্র রংপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য রাহগির আল মাহী সাদ এরশাদ ও তার ভাতিজা জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আসিফ শাহারিয়ারসহ পরিবারের কোন সদস্যই উপস্থিত ছিলেন না।
রংপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এরশাদ পুত্র রাহগির আল মাহী সাদ এরশাদ অনুপস্থিত এর কারন জানতে চাইলে সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মাসুদার রহমান মিলন দেশ রূপান্তরকে জানান, স্যার (সাদ এরশাদ) ঢাকার কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকবেন, তাই রংপুরে আসেননি। তবে দুই একদিনের মধ্যে তিনি রংপুরে আসবেন। আর অন্য সদস্যরা অনুপস্থিতি সম্পর্কে জাপার কেউই কোন কথা বলতে রাজী হয়নি।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা জাপার দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, স্যার (এরশাদ) -এর কবরে তাদের অনুপস্থিতি জাতীয় পার্টির ফাটল ধরার উল্লেখযোগ্য কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এ অনুপস্থিতি সাধারণ মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জন্ম নিয়েছে। এদিকে কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং এরশাদ ভক্তরা সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকাল থেকেই পল্লী নিবাসে ঢাকা থেকে আসা নেতারা ছাড়াও উত্তরবঙ্গের ষোলটি জেলার বিভিন্নস্থান থেকে আসা নেতা-কর্মীদের সমাগম হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পল্লীনিবাস চত্বরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের জীবনকর্ম ও রাজনৈতিক দর্শন শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
এদিকে এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রংপুরে সকাল থেকেই কোরআন খতম, নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে মাইকের মাধ্যমে কোরআন তেলায়াত ও তার রাজনৈতিক বক্তব্য প্রচার, দুপুরে অসহায় দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ এবং বিকেলে মসজিদ-মন্দিরসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন