কথিত সৌন্দর্য বর্ধন তথা উন্নয়নের নামে ৭৭টি মসজিদ ভাঙার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ।
তারা বলেন, ‘কথিত সৌন্দর্য বর্ধন তথা উন্নয়নের নামে ঢাকার চারপাশে নদীকেন্দ্রীক ৭৭টি মসজিদসহ সমগ্র দেশে আরও অনেক মসজিদ ভাঙার বিষয় যা মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর এবং কিছু মাদরাসাসমূহ ভেঙে দেয়ার চরম ইসলামবিরোধী কথা নৌপরিবহন সচিব বলেছে। কিন্তু নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেনি। আমরা মনে করি- মেয়র নির্বাচনের পূর্বে নৌপরিবহন সচিবের এসব কথা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। জামায়াত-হেফাজত, বিএনপি ইস্যু নিবে। ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী কোথাও একবার মসজিদ হলে তা ভাঙার অধিকার কারো নেই। কাজেই রাষ্ট্রদ্বীন পবিত্র দ্বীন ইসলাম, এই দেশে কোনো মসজিদ ভাঙা সাধারণ মুসালমান বরদাশত করবে না।’
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানান ওলামা লীগসহ সরকারের পক্ষের সমমনা ১৩টি দল।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘কথিত উন্নয়নের নামে ১৯৮৯ সালে নুর মুহাম্মদ মিয়ার দানকৃত ১৯৯৫ সালে রেজিস্ট্রি মূলে ওয়াকফকৃত ৬ শতক ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত হাতিরঝিলের আলোচিত ভাসমান বায়তুল মাহফুজ মসজিদটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। ফেনীর মহিপালে ফ্লাইওভারের জন্য মহাপবিত্র মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছে। কয়েক বছর আগে রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় কামাল পাশা সরণির উন্নয়নের নামে ৫টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ ও একটি মাদরাসার অনেকাংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি নদী তীরের আরো ৭৭টি মসজিদ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
তারা বলেন, ‘মসজিদ ভাঙা বা স্থানান্তরের নির্দেশ দিলেও ২০১৭ সালে মিরপুর-২-এর ২২/১৯ বড়বাগ ঠিকানার ‘নাজারেথ নভিসিয়েট ও এসএল লুইজেন সিস্টারস নামক একটি গির্জা না ভেঙে ৩ রাস্তার মোড় করে সংযুক্ত করা হয়েছে। হাতিরঝিল রাস্তা বানাতে গৌরাঙ্গ মন্দির না ভেঙে রাস্তা বানানো হয়েছে। হিন্দু বাউলদের বাড়িঘর বাচাতে নরসিংদীর শহর রাস্তার বাধের কাজ ৯ বছর আটকে রাখা হয়েছে। সিলেটে গির্জার দেয়াল বাঁচাতে রাস্তার উন্নয়ন বন্ধ রাখা হয়েছে। চট্টগ্রামের পুটিয়ার ইন্দ্রপুর মহাসড়কের নির্মাণকালে ১টি মন্দির ও শ্মশান ও হিন্দুদের কয়েকটি ঘর সরানোর প্রয়োজন থাকলেও সেতুমন্ত্রী আশ্বাস ১টি মন্দির ও শ্মশান, হিন্দুদের বাড়িঘর অক্ষত রেখে রাস্তা ঘুরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গীর্জা, মন্দির এমনকি হিন্দুদের বাড়িঘর অক্ষত রাখলেও সরকারিভাবে কেন মসজিদ ভাঙ্গা বা স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে কেন?’
বক্তারা বলেন, ‘স্বরস্বতী পূজা হিন্দুদের সার্বজনীন কোন পূজা নয়। তারপরেও এর জন্য জাতীয় পর্যায়ে ভোট পিছিয়ে দেয়া আর মুসলমানদের রোজার মাসে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখা ও জাতীয় পরীক্ষা নেয়া বিশেষ বৈষম্যমূলক। এ বৈষম্য বজায় রাখলে জামায়াত-হেফাজত ইস্যু তৈরি করবে। কাজেই এ বৈষম্য চলতে পারেনা এবং এ ইস্যু তুলে দেয়া যাবে না।’
এসময় বক্তারা ব্যাঙ্গচিত্র প্রতিযোগিতার ঘোষণা দেয়ায় নেদারল্যান্ডের কুখ্যাত এমপি গিয়ার্ট উইল্ডার্সের ফাঁসি, ৭৭টি মসজিদ ভাঙার সিদ্ধান্ত বাতিল, সিলেবাসে এবং সমাজে ইসলামী শিক্ষা বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ এবং রমজান মাসে স্কুল কলেজে সকল পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানান।
সমাবেশ ও মানবন্ধনে সমন্বয় করেন বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী। আরও বক্তব্য রাখেন- সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল জলিল, মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী প্রমুখ।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন