বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আদেশ নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশেষত বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে কৌতুহল বাড়ছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বেগম জিয়ার জামিন বিষয়ে আদেশ দেবেন সুপ্রিম কোর্ট। সেই আদেশে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী জামিন পাচ্ছেন কি পাচ্ছেন না- এ নিয়ে এখন বিএনপির তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে জল্পনা-কল্পনা চলছে।
তবে আপিলে খালেদা জিয়ার ‘জামিন পাওয়ার সুযোগ আছে’ বলে মনে করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তথা বিএনপির শীর্ষ নেতারা। অপরদিকে খালেদা জিয়া জামিনে মুক্ত না হলে ‘উদ্ভূত পরিস্থিতির’ জন্য সরকার দায়ী থাকবে বলেও হুঁশিয়ারি আসছে বিএনপির দিক থেকে।
একইসঙ্গে বিএনপি অভিযোগ আছে- দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার। তাই আইনি পথে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। তাঁর মুক্তির জন্য রাজপথে লড়াইয়ের বিকল্প নেই। তবে দলটির একাংশ আদালতের ওপর আস্থা রেখে ধারণা করছেন, আগামীকাল জামিন পেতে পারেন বেগম জিয়া।
চ্যারিটেবল মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে বেগম জিয়ার জামিন বাতিল হয়েছিল। পরে তাঁর আইনজীবীরা আপিল করলে সর্বোচ্চ আদালতে শুরু হয় জামিন আদেশের শুনানি। এরই ধারাবাহিকতায় গেল ২৮ নভেম্বর বেগম জিয়ার আইনজীবীদের করা আবেদনের আংশিক শুনানি নিয়ে জামিন আদেশের জন্য ৫ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। ৫ ডিসেম্বরেই খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে রিপোর্ট জমা দিতে সংশ্লিষ্ট মেডিকেল বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
২৮ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৬ সদস্যের বেঞ্চে বেগম জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে ৫ ডিসেম্বর জামিন আদেশের দিন ধার্য করেন আদালত। সঙ্গে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
তবে ৫ ডিসেম্বর প্রতিবেদন প্রস্তুতে আরও সময় চেয়ে মেডিকেল বোর্ড আবেদন করলে সর্বোচ্চ আদালত ৭ দিন পিছিয়ে ১২ ডিসেম্বর জামিন আদেশের পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। ওই বছরের ১৮ নভেম্বর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে জামিন ও খালাস চেয়ে হাইকোটে আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। পরে দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে বেগম জিয়ার জামিন আবেদন বাতিল করেন হাইকোর্ট।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট রাজধানীর তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলায় খালেদা জিয়া ছাড়াও তাঁর তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডিব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খানকে আসামি করা হয়।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন