এ দেশের যেকোনও পরিবর্তনের জন্য বেগম খালেদা জিয়ার একটি ইঙ্গিতই যথেষ্ট- এমন মন্তব্য করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার সেই ইঙ্গিতটা এখনও পাচ্ছি না। যেদিন পাবো সেদিন আমরা যারা মাঠ পর্যায়ের কর্মী তারা ঘরে বসে থাকবো না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তো রাতে ঘুমাচ্ছি, একবারও কি মনে করছি যে, বেগম খালেদা জিয়া ঘুমাতে পারছে কিনা! এই কষ্টটা শুধু বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে নয়। সারা দেশের মানুষের মনের মধ্যে। এই কষ্টটা নিয়ে বিএনপি কর্মসূচি দেয়ার জন্য কতটা ‘সংকল্পবদ্ধ’ কিংবা কতটা ‘লোক দেখানো’- আমার মনে সেই প্রশ্নটা জাগে। এর জন্য যদি আমাকে বহিষ্কার করা হয় আমি খুশি। তারপরেও আমার মনে প্রশ্ন থেকে যাবে- হোয়াট দ্য হেল উই আর গোয়িং।’
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে “আর কতকাল বন্দি থাকবে খালেদা জিয়া, নির্দয়ভাবে কত মরবে রুবাইয়াত শারমিন রুম্পা” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলাল বলেন, ‘পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে কোনও শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে নাই। কিন্তু শেখ হাসিনার বাহিনী একের পর এক শিশু ধর্ষণ করে যাচ্ছে বাংলাদেশে। আড়াই বছরের শিশু থেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধ মায়ের বয়সী মহিলাকেও ধর্ষণ করছে তারা।’
তিনি বলেন, ‘এই শেখ হাসিনার আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহারে ছাত্রীদেরকে নির্যাতন করা হচ্ছে। তৎকালীন ভিসি আরেফিন সিদ্দিকী তখন বলেছিলেন, ‘সব ভিডিও করা আছে, এর সঠিক বিচার হবে’। কিন্তু এর বিচার কী হয়েছে? হয় নাই। ৭ মার্চের ভাষণ উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করেছিল আওয়ামী লীগ। সেবার আওয়ামী লীগের এই বাহিনী দ্বারা স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিল। সেদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিল, ‘এর সঠিক বিচার হবে। বিচার কি হয়েছে? হয় নাই।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ পদে যদি চোর-বাটপার, খুনি-ধর্ষকরা বসে থাকে তাহলে দেশের কী হবে? ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা কী জবাব দেবো?’
তিনি বলেন, ‘শুধু খালেদ, জিকে শামীম, সম্রাটকে গ্রেফতার করলেই দেশে দুর্নীতি শেষ হবে না, এটা একটা আইওয়াশ মাত্র। সমুদ্রের সব পানি যদি দূষিত হয় সেখান থেকে কয়েক বালতি পানি উঠালেই বাকি পানি বিশুদ্ধ হয়ে যায় না। দেশের ক্ষমতাধররা সবাই দুর্নীতিবাজ, ফলে সেখান থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেই দেশে দুর্নীতি কমে আসে না।’
গতকাল বিপিএলে (বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ) যা হয়েছে সেগুলোর সঙ্গে আমাদের সমাজ-রাষ্ট্র, কৃষ্টি-কালচার-সংস্কৃতির কোনও মিল নেই মন্তব্য করে আলাল বলেন, ‘আমাদের শিল্পীরা কখনও এ অবস্থায় নাচে? এ অবস্থা আওয়ামী লীগ সৃষ্টি করছে। ভারত থেকে সালমান খান ও ক্যাটরিনা কাইফসহ অন্যান্য শিল্পীদের নিয়ে এসে অনুষ্ঠান করছে কেন? আমার দেশে কি কোনও শিল্পী নাই? জেমস, মনির খান, সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা কি আমাদের দেশে নেই। তাদের ডাকা হয়নি, কারণ তারা তো উলঙ্গ হয়ে নাচবেন না। তাই সালমান-ক্যাটরিনাকে আনা হয়েছে। এই আওয়ামী লীগ সরকার অন্য দেশ থেকে এসব শিল্পী এনে উলঙ্গভাবে নাচিয়ে আমাদের নারী-শিশু অধিকার ক্ষুণ্ন করেছে।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আওয়াল মিন্টু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ ও নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন