বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে গতকাল রোববার রাজধানীসহ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। যদিও পুলিশি বাধায় কোথাও কোথাও বিক্ষোভ মিছিল করতে পারেনি তারা। এ দিন সিরাজগঞ্জে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে দুই দলের অর্ধশত নেতা-কর্মীসহ ৩ পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।
এদিকে, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম. রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু গতকাল রোববার বলেছেন, ১২ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে এক দফার আন্দোলন শুরু হবে। এটা হবে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের আন্দোলন। তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই গণতন্ত্রের মুক্তি। তার মুক্তি হলে সেটিই হবে গণতন্ত্রের মুক্তি, গণমাধ্যমের মুক্তি, গণমানুষের মুক্তি। তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহবান জানান।
জানা যায়, রোববার দেশের বিভিন্ন জেলা সদরে বিক্ষোভের কর্মসূচি পালিত হলেও রাজধানী ঢাকায় তেমন কোনো কর্মসূচি পালন করেনি বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভের কর্মসূচি পালনে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা থাকলেও আমলে নেয়নি দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। আগামীকাল মঙ্গলবারও একই ধরনের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। শনিবার শীর্ষ নেত্রীর মুক্তির দাবিতে ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভের কর্মসূচির ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ কর্মসূচি সফলের জন্য ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশনা দেয়া হয়। শীর্ষ নেতারা থানা নেতাদের দায়িত্ব দেন প্রতিটি থানা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করার। সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, থানায় এলাকায় কর্মসূচি হচ্ছে। পুলিশ এবং ক্ষমতাসীনদের ভয়ে নেতাকর্মীরা সাবধানতার সঙ্গে এসব কর্মসূচি পালন করায় আন্দোলনের উত্তাপ লক্ষ্য করা যায়নি।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, থানায় থানায় কর্মসূচিগুলো সব সময় একই ফরমেটে পালন হয়ে থাকে। এসব কর্মসূচি সফলে একটি ব্যানার ও হাতেগোনা কয়েকজন নেতাকর্মী বা ভাড়াটের প্রয়োজন হয়। থানার সবচেয়ে নিরাপদ একটি স্থান একটি ছবি তোলার মধ্যেই এই কর্মসূচির কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকে। অন্যদিকে কেন্দ্র থেকে থানা বিএনপির দপ্তরে দায়িত্বপ্রাপ্তদের বলা আছে, মিছিলে কারা অংশ নিচ্ছে এবং একটি ছবি কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য। আর সেই সব বিষয়গুলো কেন্দ্রে এলে তা একত্রে করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আকারে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো হয়। সঙ্গে এসব ছবি পাঠানো হয় দলের হাইকমান্ডের কাছে। মূলত অধিকাংশ থানায় কোনো কর্মসূচি হয় না।
রাজধানীর অধিকাংশ থানা এলাকায় উত্তাপ ছড়ানোর মতো বিএনপির কোনো কর্মসূচি না হলেও, সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের দপ্তর সম্পাদক সাইদুর রহমান মিন্টু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, প্রায় সব থানায় বিশাল মিছিল হয়েছে। পুলিশি বাধার মধ্যে ও বিভিন্ন থানার নেতৃবৃন্দ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ কর্মসূচি সফল করেন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে তিনি আরও জানান, শাহবাগ, চকবাজার, কোতোয়ালি, কদমতলী, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর লালবাগ, শাহজাহানপুর, মুগদা, কলাবাগান, ধানমন্ডি, পল্টন, সবুজবাগ, ওয়ারী ও সূত্রাপুরসহ সকল থানায় মিছিল হয়েছে।
এদিকে, গতকালের কর্মসূচির পর বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দাবি করেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ ক্যাডারদের আক্রমণে কোতোয়ালি থানা বিএনপি নেতা লিমন, চকবাজার থানা বিএনপির নেতা আতিক, মঈন, হৃদয়সহ ৫ জন এবং শাহবাগ থানার আবদুর রশিদ, সুমন, শাকিল, সুজনসহ ১০/১২ জন আহত ও শাহবাগ থানা বিএনপির মো. রফিক নামে একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।আস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন