নিজ নিজ দলের অভ্যন্তরীণ ‘সংকটের’ মধ্যেও ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনকে ছাড়াই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে আইজি প্রিজন্সকে নামের তালিকাসহ চিঠি দেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। দিন তারিখ উল্লেখ করে চিঠি দেয়ার এক সপ্তাহ পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো রকম ‘সাড়া’ পাচ্ছেন না ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।
কবে নাগাদ খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে পারে এ বিষয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বললেও তারা চূড়ান্ত কিছু জানাতে পারেননি।
তবে নামের তালিকায় থাকা এক নেতা পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘কখন নাম দিল, কার নাম দিল; আমি কিছুই জানি না। তবে সাক্ষাতের বিষয়টি চূড়ান্ত হলে তখন দেখা যাবে।’
গত ১৭ নভেম্বর আইজি প্রিজন বরাবার নামের তালিকাসহ ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে ১৮ অথবা ১৯ নভেম্বর সময় চাওয়া হয়। কিন্তু আজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) পর্যন্ত কোনো সাক্ষাতের বিষয়টি চূড়ান্ত করতে পারেনি ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।
ঐক্যফ্যন্টের দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘আমরা আইজি প্রিজনের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। এখন পর্যন্ত আমরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য অনুমতি পাইনি। অনুমতি পেলেই সাথে সাথে আপনাদের (গণমাধ্যমকর্মীদের) জানানো হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে গত ২১ অক্টোবর ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের জানানো হয়, খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতে সরকারের কোনো বাধা নেই। এরপর থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের ‘সাক্ষাৎ না করার’ বিষয়টি আলোচনায় আসে। এরমধ্যে গত ১৭ নভেম্বর ড.কালাল হোসেনকে ছাড়াই খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য নামের তালিকা পাঠানো হয়।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সাক্ষাৎ কবে নাগাদ হতে পারে এমন প্রসঙ্গে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘এখনও দিন-তারিখ ঠিক হয়নি। আমরা আইজি প্রিজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। ওখান থেকে তারিখটা পেলেই চূড়ান্তভাবে বলতে পারবো।’
এছাড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যমত নেতা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনও আমি কিছুই জানি না। সাক্ষাতের দিনক্ষণ ঠিক হলে তারপর বলতে পারবো।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালও একই কথা বললেন।
চিঠির আবেদনপত্রে বলা হয়, সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থ। তার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের সাথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৮ সদস্য বিশিষ্ট নেতারা সাক্ষাৎ করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী গুরুতর অসুস্থ বিধায় অত্যন্ত মানবিক কারণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির শীর্ষ নেতাদের সাক্ষাতের সম্মতি জ্ঞাপন করেন। তার সূত্র ধরে ১৮ অথবা ১৯ নভেম্বর গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়ার সাথে প্রথম পর্বে নিম্নলিখিত নেতারা সাক্ষাৎ করতে আগ্রহী। জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
পাঁচজনের তালিকায় যারা আছেন, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া, জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রব।
তবে প্রথম পর্বের তালিকায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের নাম রাখা হয়নি।
গত বছর ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য পহেলা এপ্রিল বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৬১২ নম্বর কেবিনে তাকে রাখা হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন