ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের শরীক রাশেদ খান মেননের বক্তব্য নিয়ে চিন্তিত জোটের সদস্যরা। এজন্য তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম।
শনিবার বরিশালে দলীয় এক অনুষ্ঠানে রাশেদ খান মেনন বলেছেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমিও নির্বাচিত হয়েছি৷ তারপরও আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, ওই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি৷ এমনকি পরবর্তীতে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেনি দেশের মানুষ। বরিশালে দেয়া তার ওই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ডয়চে ভেলের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জনগণ ভোট দিতে পারে নাই। এটা আমি বলেছি৷ তবে জনগণ যদি ভোট দিতে পারত তাহলে শেখ হাসিনাকেই জয়ী করত। জোটকেই জয়ী করত।
আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের কয়েকজন নেতা এরইমধ্যে বলেছেন রাশেদ খান মেনন যা বলেছেন তা তিনি বিশ্বাস করলে তার পদত্যাগ করা উচিত৷ ১৪ দলের শরীক সাম্যবাদী দলের প্রধান দিলীপ বড়ুয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তিনি কেন বলেছেন, তার কথা সঠিক কিনা সেটার জবাব আমি দেব না৷ তবে তিনি যা বলেছেন তা পদত্যাগ করেই বলা উচিত ছিল৷ তিনি যা বলেছেন তার জন্য এখন তার পদত্যাগ করা উচিত৷ তার দু’টি অবস্থানতো একসঙ্গে হয় না।
মেনন বলেন, আমি কোথাও বলিনি জনগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোট দেয়নি বা আমাকে ভোট দেয়নি। আমি বলেছি জনগণ ভোট দিতে পারেনি। কথাটা সরাসরি হয়ে গেছে। কিন্তু একথা আমি নতুন বলিনি, আগেও বলেছি। পার্লামেন্টে বলেছি।
ভোট ছাড়াই নির্বাচিত হয়ে গেলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, তা কেন হবে? আমিতো সেটা বলিনি৷ আমি বলেছি কিছু অতি উৎসাহী কর্মকর্তার কর্মকাণ্ড এই নির্বাচনকে অশুদ্ধ বা অবৈধ করে না। কিছু লোকতো ভোট দিয়েছে। তাতে আমরা জয়ী হয়েছি৷ জোট জয়ী হয়েছে।
৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগের রাতেই ভোট হয়ে গেছে বিএনপির এই অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি তাদের এই অভিযোগের কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। আর আমার মতামত হলো আগের রাতে ভোট হয়ে গেছে একথা আমি কোথাও বলিনি। আমরা মনে করি প্রশাসনের অতি উৎসাহ এবং বাড়াবাড়ি এর জন্য দায়ী।
মেনন বলেন, ‘‘আমি পদত্যাগ করব না৷ পদত্যাগের প্রশ্ন আসে না৷ এটাতো শুধু নৈতিকতার প্রশ্ন নয়, এরসঙ্গে রাজনৈতিক প্রশ্ন জড়িত আছে৷ ১৯৮৬ সালেও তো বলা হয়েছিল মিডিয়া ক্যু হয়েছিল৷ তারপরও তো সবাই পার্লামেন্টে ছিলো৷ পদত্যাগ না করেও ভোটের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া যায়৷
১৪ দলের পক্ষ থেকে রাশেদ খান মেননের কাছে তার বক্তব্যের জন্য ব্যাখ্যা চাওয়া হবে৷ ১৪ দলের সমন্বয়ক আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম ডয়চে ভেলেকে বলেন, তার জবাব দেখে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব৷
মেননের এ ধরনের বক্তব্য নিয়ে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘তার অবস্থান নিয়েতো আমরাও চিন্তিত হয়ে পড়েছি। তার মত একজন সিনিয়র নেতার কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্যতো আমরা চিন্তাও করতে পারি না।
এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, উনি (মেনন) যা বলেছেন তা নতুন কিছু না৷ এটা দেশের সবাই জানেন। সারা বিশ্বের মানুষ জানেন। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের নামে।
এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন