আড়াই বছরেরও বেশি সময় আগে ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি বিএনপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও মহানগর দক্ষিণের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এরইমধ্যে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি সংগঠনটি। এবার সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে ২৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে যাচ্ছে যুবদল। চলতি অক্টোবর মাসেই নতুন এ পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়া হবে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে আর মাত্র ৩ মাস পরই শেষ হচ্ছে বর্তমান কমিটির মেয়াদ। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না করে সরাসরি কাউন্সিলের দাবি জানাচ্ছেন কেউ কেউ। আড়াই বছর আগে আংশিক কমিটি ঘোষণার পর এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী ৩৩ মাসেও সেটি দিতে ব্যর্থ হয়েছেন সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। এমনকি বিগত সময়গুলোতে কমিটি ‘হচ্ছে, হবে, দিচ্ছি’ বলে গণমাধ্যমকে বিভিন্ন সময় আশ্বস্ত করেছেন যুবদল নেতারা।
আধিপত্যবাদ ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতার দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করায় সাংগঠনিক কার্যক্রমও মুখ থুবড়ে পড়েছে। শীর্ষ নেতাদের মনোমালিন্য ও দূরত্বের কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হচ্ছে না বলে তৃণমূলের অভিযোগ আছে। ফলে তারুণ্যনির্ভর ও প্রভাবশালী এই যুব সংগঠনটির নেতাকর্মীরাও এখন কার্যালয় বিমুখ, কর্মসূচি পালন হচ্ছে দায়সারাভাবে। সর্বত্র ভগ্নদশা। বাড়ছে হতাশা আর ক্ষোভ। এভাবে চলতে থাকলে যুবদল অদূর ভবিষ্যতেই গভীর সংকটে পড়বে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতারা।
পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে সামনে রেখে গেল বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে যুবদল নেতাদের সঙ্গে স্কাইপে বৈঠক করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে যুবদলের আংশিক কমিটির শীর্ষ ৫ নেতাসহ ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা না করা কিংবা কাউন্সিলের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
তবে যুবদল নেতারা তারেক রহমানকে একটি বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, এই মুহূর্তে কোনও কাউন্সিল করা যাবে না। কারণ কাউন্সিল করলেও অনেক ত্যাগী নেতা বাদ পড়বেন। তখন তারা নিজেদের আর কোনও পরিচয় দিতে পারবেন না। আর পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলে অনেকেই পদ পেয়ে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করতে পারবেন। রাজনীতির এই সংকটকালে কাউকে বাদ দেয়া নয়, সবাইকে একসঙ্গে নিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছুতে হবে।
বৈঠকে তারেক রহমান আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা জমা দেয়ার নির্দেশ দেন। আর এই পূর্ণাঙ্গ কমিটির মেয়ায় শেষ হবে আগামী তিন মাস পরে, অর্থাৎ ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি।
ফলে আপাতত পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলেও মেয়াদ শেষে তিন মাস পরেই যে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতা নির্বাচন করা হবে সেটি যুবদল নেতাদের স্পষ্ট করে দিয়েছেন তারেক রহমান।
৩৩ মাস আগে হওয়া যুবদলের কেন্দ্রীয় আংশিক কমিটির ৫ জন শীর্ষ নেতার মধ্যে আছেন- সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্ত্তাজুল করিম বাদরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়ন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান।
একইসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের আংশিক কমিটিতে আছেন- সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম মিল্টন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল রিয়াদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফউদ্দিন জুয়েল ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা জগলুল পাশা পাপেল।
আর মহানগর দক্ষিণের আংশিক কমিটির নেতাদের মধ্যে আছেন- সভাপতি রফিকুল আলম মজনু, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন, সিনিয়র সহ-সভাপতি শরিফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হলেন সাইদ হাসান মিন্টু ও সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল উদ্দিন খান শাহীন।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন