আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিদেশি মিশনগুলোর উদ্বেগের সমালোচনা করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
তিনি বলেছেন, ‘আমরা আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের ধন্যবাদ জানাই। তারা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের উন্নয়নে কাজ করছেন। এজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপানসহ সব উন্নয়ন সহযোগীকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।’
‘যুক্তরাষ্ট্রে যখন স্কুলে গোলাগুলি হয় তখন কি তারা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে? যখন পাকিস্তানে শিয়া মসজিদ পুড়িয়ে দেয়া হয় তখন কি প্রতিক্রিয়া জানায়? অতীতে যখন বাংলাদেশে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে তখন কি তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে? যারা বক্তব্য রেখেছেন তাদেরকে বলবো, কূটনৈতিক শিষ্টাচার যাতে রক্ষিত হয়, সেভাবে যেন আপনারা বক্তব্য রাখেন। এইভাবে কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে বক্তব্য রাখা সমীচীন নয়। এটা আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। এ নিয়ে বিদেশিদের আগ বাড়িয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই। এসময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে গোলাগুলির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।’
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে চট্টগ্রাম বিভাগ সাংবাদিক ফোরাম ঢাকার দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেভেন মার্ডারের পর শফিউল আলম প্রধানসহ আরও অনেকের শাস্তি হয়েছিল। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর শফিউল আলম প্রধানকে ক্ষমা করে দিয়েছিল। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হত্যাকাণ্ড হয়েছিল, অপরাধীকে জিয়াউর রহমান ক্ষমা করে দিয়েছিল। এভাবে শিক্ষাঙ্গনে বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে, নৈরাজ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে শাস্তি প্রমাণের ভিত্তিতে শাস্তি হয়েছিল। তাদের অনেককে জিয়াউর রহমান মুক্ত করে দিয়ে ছাত্রদল গঠন করে। আর বাংলাদেশের মেধাবী ছাত্রদের সন্ত্রাসী বানিয়েছিল। জিয়াউর রহমান, এরশাদ যখন ক্ষমতায় ছিল তখন শিক্ষাঙ্গনে নৈরাজ্য, সেশন জট স্বাভাবিক ঘটনা ছিল।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনও ধরনের নৈরাজ্যকে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্রয় দেয় না উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বুয়েটের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটার পরপরই কেউ দাবি তোলার আগে যারা প্রাথমিকভাবে জড়িত মনে হয়েছে, তাদের প্রায় সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ছাত্রলীগ তাদেরকে বহিস্কার করেছে। বুয়েটে যখন সনি হত্যাকাণ্ড ঘটে, বিএনপি কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ছাত্রদের করুণ মৃত্যু ঘটে তখন কি বিএনপি ব্যবস্থা নিয়েছিল? নেয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়েছে। যারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় সেজন্য সরকার বদ্ধপরিকর।’
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হবে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা জানি আমাদের দলে অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এই আবর্জনা পরিষ্কার করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
একটি মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছে এমনটি দাবি তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির কয়েকজন নেতা গত কয়েকদিন ধরে নানা বক্তব্য দিচ্ছেন। তাদের কারো কারো বক্তব্য শুনলে মনে হয় তারা বদ্ধ উন্মাদ। অতীতে একটু ফিরে তাকান, তারপর নিজের কাছে প্রশ্ন রাখেন। এরপর দয়া করে কথা বলেন।’
ভারতে গ্যাস রফতানি এবং রাডার স্থাপন নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের আমদানিকৃত গ্যাস ভারতের ত্রিপুরায় রফতানি হবে। আমাদের চাহিদা মিটিয়ে ত্রিপুরায় বোতলজাত এলপিজি গ্যাস রফতানি করবো, এটা তো আমাদের অর্থনীতির জন্য সহায়ক। এসময় তেল গ্যাস বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটিকে ভুল সুধরে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।’
তিনি বলেন, ‘ভারত সরকার আমাদের ২০টি রাডার বসানোর জন্য অনুদান দিবে কোস্টগার্ডকে। সেটির মালিকানা আমাদের। যারা এ নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে বিভ্রান্ত করছে আমি মনে করি এটি হলুদ সাংবাদিকতার পর্যায়ে পরে।’
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন