বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ছাত্রদের জন্য। এই দেশে আবার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে ছাত্রদের আন্দোলনের মাধ্যমেই হবে। ছাত্ররাই শেষ ভরসা।যদি ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে দেয়া হয় তাহলে এই দেশে যে আর কোনোদিন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে- তা প্রত্যাশা করা ঠিক হবে না।
আজ (বৃহস্পতিবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। চলতি সপ্তাহে বুয়েটে এক ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার পর দেশে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই এসব কথা বলেন দুদু। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হবে কি না- এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও না সূচক জবাব দেন। তবে তিনি বলেন, বুয়েট মনে করলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে পারে।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বেদনাদায়ক, মর্মান্তিক, কষ্টের ঘটনা হলো বুয়েটের একজন মেধাবী ছাত্রকে মর্মান্তিকভাবে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনার কারণে চারদিকে একটা কথা হচ্ছে- সেটি হচ্ছে বুয়েটের ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন এটি বুয়েটের ব্যাপার। আমরা ছাত্র রাজনীতি থেকে এখানে এসেছি। এই দেশে ছাত্ররাজনীতির অনেক ভূমিকা রয়েছে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ছাত্র রাজনীতির অর্জন। ইতিহাসের গৌরবগাথা ১১ দফার আন্দোলন ছাত্র রাজনীতির অর্জন। মুক্তিযুদ্ধ ছাত্ররাজনীতির অর্জন। এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছে ছাত্র রাজনীতি। '৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মূল ভূমিকা পালন করেছে ছাত্ররা। এটি ছাত্র রাজনীতির অর্জন।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, যারা ছাত্র রাজনীতি ভয় পান, তারা গণতন্ত্রকে ভয় পান, যারা ছাত্ররাজনীতিকে ভয় পান তারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে ভয় পান, যারা ছাত্রআন্দোলনকে ভয় পান তারা দেশের গণতন্ত্রে নয় ভিন্নমত পোষণ করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ঘোর অন্ধকারের দিকে আমরা এগোচ্ছি। দেশে গণতন্ত্র নেই, ভোটের অধিকার নেই, জবাবদিহিতা নেই, মানবাধিকার নেই, আপনি কথা বলবেন একরকম, সেটা অন্য দিকে নিয়ে মামলা দিয়ে দেবে- এই হচ্ছে দেশের অবস্থা।
তিনি বলেন, যারা ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করার জন্য হায়েনার মতো ছাত্রদের মেরে ফেলছে আমি তাদের বলবো, একটু শান্ত হোন। এই দেশটি স্বাধীন হয়েছে ছাত্রদের আন্দোলনের ফলে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ছাত্রদের জন্য।এই দেশে আবার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে ছাত্রদের আন্দোলনের মাধ্যমেই হবে। ছাত্ররাই শেষ ভরসা। সেটি যদি বন্ধ করে দেয়া হয় তাহলে এই দেশে যে আর কোনোদিন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে- তা প্রত্যাশা করা ঠিক হবে না।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাবেক ছাত্রনেতা সাইফুদ্দিন মনির, খন্দকার লুৎফর রহমান, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, বর্তমান সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন