তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ভিমরুলের আক্রমণের শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘গতকাল তিনি (তথ্যমন্ত্রী) কলকাতা বিমানবন্দর থেকে আগরতলা বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন ইন্ডিয়ান বিমানে করে। সেই বিমান ছাড়ার কথা ছিলো ৯টা ৪০ মিনিটে। ছেড়েছে ১২টা ৪০ মিনিটে। এই তিন ঘণ্টা তাকে বিমানের মধ্যে বসে থাকতে হয়েছে। কারণ বিমান ঘিরে রেখেছিল লক্ষ লক্ষ বিষাক্ত ভিমরুল। আমরা আশঙ্কা করছি তথ্যমন্ত্রী দেশে এসে হয়তো বলবেন যে, ভিমরুল দিয়ে বিমানে আক্রমণ করানোর পেছনে বিএনপির হাত আছে কিনা- সেটাও খুঁজে দেখতে হবে। আমরা এবার দেখার অপেক্ষায়, ভারতে ভিমরুলের আক্রমণ নিয়ে তিনি দেশে ফিরে কী বলেন?’
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবর সামনে জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের আয়োজনে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আমরা বলতে চাই তথ্যমন্ত্রীকে, বিএনপির হাত থাকার দরকার নাই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সৈনিকেরা অনেক বেশি বিষাক্ত হুলের ক্ষমতা রাখে। বেগম জিয়াকে অনতিবিলম্বে মুক্তি না দিলে বিএনপির লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীদের হুলের আঘাত সহ্য করতে পারবেন না। কারণ ভিমরুল পানির নিচে গিয়েও কামড়ায়। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, নিজেদের মুক্তির পথকে একটু সহজ করুন। নইলে কিন্তু খবর আছে।’
যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘পত্রিকায় আসছে, অনেকেই বলছেন শোভন-রাব্বানীকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটি চমৎকার কাজ করেছেন। আরে ভাই, এটা কি সুই নাকি যে সুইয়ের একটা ছিদ্র আছে এটা বন্ধ করে দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে। দুর্নীতির চালনি হচ্ছে আওয়ামী লীগ। কয়টা ছিদ্র আটকাবেন? প্রধানমন্ত্রীকে বাহবা দিয়েন না। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে নাকি এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে। এটা আওয়ামী লীগের লোকেরা বলাবলি করে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদাধিকার বলে ডাকসুর সভাপতি। তিনি যে ডাকসু নির্বাচন করেছেন সেই নির্বাচনে রাতের বেলা স্লিপ, চিরকুট দিয়েছে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। সেই স্লিপের ভিত্তিতে ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে, অছাত্রদের ছাত্র বানিয়ে তাদেরকে প্রার্থী করেছেন। তাদেরকে জিতিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। অথচ আপনি ডাকসুর সভাপতি হিসেবে আপনার ভিপি নূরকে সারা বাংলাদেশে পেটাচ্ছে ছাত্রলীগের নেতারা। যেখানে যায় সেখানেই নূরুকে আঘাত করা হচ্ছে। অথচ নূর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ভিপি।’
আলাল বলেন, ‘নূর এমন কথা সাংবাদিকদের বলেছেন যে, গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা তাকে হুমকি দিয়েছে তারও নাকি খালেদা জিয়ার মতো পরিণতি হবে। এই সমস্ত ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছ থেকে একটা বিবৃতি দেয়া হলো না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত ভিপিকে কেন হুমকি দেয়া হচ্ছে, কেন তার বাড়িতে হামলা করা হচ্ছে, কেন বারবার তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে কেন মামলা দেয়া হচ্ছে? এই নৈতিক স্খলনের দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদত্যাগ চাই।’
আলাল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া যদি এত জনপ্রিয় না হতেন, জনপ্রিয় নেতাকর্মী নির্ভর না হতেন, একটি দলের প্রধান না হতেন গণতন্ত্রের পক্ষে আপসহীন লড়াই না করতেন আজকে তাঁকে কারাগারে থাকতে হতো না। আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন মায়া, মহিউদ্দিন আলমগীরের মতো লোকেরাও মুক্তমঞ্চে ঘুরে বেড়ান। আজকে তিনিও (খালেদা জিয়া) ঘুরতে পারতেন। আওয়ামী লীগের সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী মান্নান দুদকের মামলা থাকার পরও মুক্ত, নাজমুল হুদাও ঘুরে বেড়াচ্ছেন। শুধু বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি। এই যে অবিচার এই অবিচারের বিচার যখন শুরু হবে কত শত বৎসর কত হাজার বছর লাগবে এটা কেউ বলতে পারবে না।’
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে মানবন্ধনে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, আবদুস সালাম আজাদ, তাঁতীদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যক্ষ বাহাউদ্দিন বাহার ও যুগ্ম-আহ্বায়ক ড.কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন