বর্তমান জালিম সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে না পারলে কারও অস্তিত্ব থাকবে না বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘এই দেশে এখন আর কেউ নিরাপদ নয়। গুম-খুন-ধর্ষণ প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছে। এমনকি কারও বাড়িঘরে সুন্দরী মেয়ে থাকলে তাদেরকেও তুলে নিয়ে যেতে দ্বিধাবোধ করছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।’
রিজভী বলেন, ‘আজকে পরিবার, বস্তি, জনপদ থেকে শুরু করে দেশের গণতন্ত্রে বিরোধী দলের অস্তিত্বকে খালি করে দেয়ার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ সরকার। ‘খালি করার নীতি নিয়ে’ দেশে শোষণ-নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের একযোগে লড়াই করতে হবে। তা না পারলে কারও অস্তিত্ব থাকবে না। কারও গৃহ থাকবে না, বাড়ি থাকবে না, সন্তান-সন্ততি থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘মিরপুরের চলন্তিকা, আরামবাগসহ একের পর এক বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এসব বস্তিতে বসবাসকারী অসহায় বস্তিবাসীর ওপর শকুনের দৃষ্টি পড়েছে। ক্ষমতাসীনদের কারও ওই জায়গাটা দখল করতে হবে- এজন্য জায়গা খালি করতেই আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। আগুন লাগিয়ে অসহায় মানুষদের তাড়িয়ে ওই জায়গাগুলো তারা দখল করছে। এটা হচ্ছে আওয়ামী সরকারের ‘খালি করার নীতি’। যার শিকার হয়েছেন চলন্তিকার বস্তিবাসী।’
সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তরের পক্ষ থেকে মিরপুরের চলন্তিকা বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
গত ১৬ আগস্ট রাতে চলন্তিকা বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বস্তির প্রায় ৩ হাজার ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে কিছু মানুষের হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেন রিজভী।
চলন্তিকা বস্তিকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘আজকে মিডনাইট সরকারের একটাই নীতি- সারা বাংলাদেশ থেকে বিরোধী দল খালি করে দাও, বিএনপিকে খালি করে দাও। এর জন্য তারা গুম, ক্রসফায়ার, মামলা, গ্রেফতার এবং আটক করে রেখে দেশ থেকে বিরোধী দল খালি করতে চায়। হয়তো ক্ষমতাসীন কারও জায়গাটা দরকার। তাই খালি করতে হবে। কিভাবে করবে? এজন্য তারা আগুন লগিয়ে দিয়েছে। কয়েকটি জায়গায় এধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। প্রথমে আগুন লাগিয়ে দিয়ে অসহায় মানুষদের মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। এরপর ওই জায়গাগুলো তারা দখল করছে। এটা হচ্ছে আওয়ামী সরকারের খালি করার নীতি। যার শিকার হয়েছেন চলন্তিকার বস্তিবাসী।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী সরকার যতদিন থাকবে ততদিন এই খালি করার নীতির মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষকে বসবাস করতে হবে। ওরা যদি দেখে যে বিরোধী দল কিংবা সরকারের সমালোচনাকারী কারও একটি বাড়ি সুন্দর আছে তাহলেই তারা ওই বাড়িটি খালি করার নীতি অনুসরণ করে। এমনকি যদি মনে করে যে কোনও বাড়িতে সুন্দরী মেয়ে আছে তাহলে তাকে তুলে নিয়ে যেতে হবে, সেটা করতেও তারা দ্বিধাবোধ করে না।’
তথাকথিত উন্নয়নের নামে সরকার মানুষের সাথে উপহাস, হাসি-ঠাট্টা করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সরকারের লোকেরা গর্ব করে বলে দেশ উন্নত হলে সেখানে ডেঙ্গু হয়। কিভাবে মানুষকে নিয়ে তারা হাসি ঠাট্টা করে? অথচ এটা একটা মহামারি, প্রতিদিন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। আর এটাকে তারা তাদের তথাকথিত উন্নয়নের সাথে মিলিয়ে বলছে, উন্নয়ন হচ্ছে বলেই এডিস মশার প্রাদুর্ভাব হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের ইচ্ছাতেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘২১ আগস্ট বোমা হামলা মামলায় ওনাদেরই লোকেরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নামে চার্জশিট দিতে পারেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সম্পূরক চার্জশিটে তারেক রহমানের নাম অন্তর্ভুক্ত করে। অথচ তার আগের দুটি চার্জশিটের কোনটিতেই তারেক রহমানের নাম ছিল না।’
মহানগর উত্তর বিএনপির দফতর সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, মো. ইয়াছিন আলী, সাজ্জাদ হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন মতিন, মো. আউয়াল, ইঞ্জিনিয়ার মজিবর রহমান, হাজী মো. তৈমুর, রেজাউল কবীর ও মো. আলাউদ্দীন প্রমুখ।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন