ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের মেয়াদ এখনো শেষ না হলেও এরইমধ্যে আগামী নির্বাচন ও এর প্রার্থিতা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম হয়ে উঠেছে। নির্ধারিত সময় এ দুই সিটিতে নির্বাচন হবে কিনা, বর্তমান মেয়র-কাউন্সিলদের মধ্যে কারা ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন পাবেন তা আলোচনার মূখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে, এনিয়ে আওয়ামী লীগেও এখন চুলচেরা বিশ্লেষণ, পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা চলছে। কেননা রাজনৈতিক কারণে ক্ষমতাসীন এ দলটি গতবারের মতো এবারও ঢাকার দুই সিটির মেয়রের পাশাপাশি বেশিরভাগ কাউন্সিলরের পদ নিজেদের দখলে রাখতে চাইছে। এ প্রেক্ষাপটে মেয়রের পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থী বাছাইয়ে দলের নীতি-নির্ধারকরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যায়যায়দিন
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকার মেয়র ও কাউন্সিলরদের বড় ভূমিকা থাকবে। ওই নির্বাচনের আগে ঢাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে চায় দলটি। তাছাড়া দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় আগামী নির্বাচনকে নিজেদের বাঁচা মরার লড়াই হিসেবে নিয়েছে বিএনপি। সে নিরিখে ভেতরে ভেতরে নানা প্রস্তুতিও নিচ্ছে। সরকারের এ মেয়াদের শেষ দিকে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে বিএনপি ও তার মিত্ররা। তখন আন্দোলনের নামে বিএনপি যদি কোনো নাশকতা করার চেষ্টা করে, সে ক্ষেত্রে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে প্রতিরোধ করার চিন্তা করছে ক্ষমতাসীন দল। সে লক্ষ্যে দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জনপ্রিয় ও শক্তিশালী প্রার্থীর সন্ধান করছে আওয়ামী লীগ।
আগামী ২০২০-২১ সালকে মুজিববর্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। পরের বছর উদযাপিত হবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এই দুটি বড় জাতীয় উৎসবে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সক্রিয় ভূমিকা চান দলের নীতি-নির্ধারকরা। তাছাড়া রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিও নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক তৎপরতা চালাচ্ছে। তাই যোগ্যপ্রার্থী বাছাই করতে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে এবং দলীয়ভাবে জরিপ চালাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল। এর মাধ্যমে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী বাছাই করে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের মাধ্যমে ঢাকার কর্তৃত্ব নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ।
এ প্রসঙ্গে দলের নেতারা বলছেন, ঢাকার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে জরিপ চলছে। জরিপে বর্তমান কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করছেন তৃণমূল নেতাকর্মী ও বাসিন্দারা। গত মেয়াদে যারা দলীয় মনোনয়নে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে মূল্যায়ন করেননি, এবার তাদের মনোনয়ন দেয়া হবে না। যেসব প্রার্থী নিজের জনপ্রিয়তা দিয়ে জয় লাভ করতে পারবেন, তাদেরকে মনোনয়ন দেয়া হবে। মেয়র পদেও সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীর দেয়ার ব্যাপারে কাজ চলছে। রাজধানী ঢাকাকে একটি আধুনিক ও বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে তুলতে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থী বাছাই করা হবে।
সম্প্রতি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘কয়েক মাস পর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন। জোর করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে শেখ হাসিনা নির্বাচনে জিততে চান না। আমরা জনগণকে খুশি করে তাদের রায় মেনে নির্বাচিত হতে চাই। আপনারা কেউ যদি ভাবেন ক্ষমতায় আছি, জিতেই যাব, তা হলে ভুল করবেন।’আস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন