বিষয়টি আঁচ পাওয়া গিয়েছিল পাঁচ দিন আগেই। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মারা যাওয়ায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পদের ভার আনুষ্ঠানিকভাবে জিএম কাদেরের হাতে হস্তান্তর করা হয়।
এত বড় ঘটনার ওই অনুষ্ঠানে ১৮ জুলাই আসেননি এরশাদের স্ত্রী দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন। তার অনুসারি দলের অন্য নেতাদেরও সেদিন দেখা মেলেনি।
বনানীতে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের ওই সংবাদ সম্মেলনে জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ এরশাদের ভাই জিএম কাদেরের হাতে দায়িত্ব তুলে দেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ০/১ ক ধারা অনুযায়ী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মৃত্যুর আগে বলে গেছেন, তার অবর্তমানে জিএম কাদের দলের চেয়ারম্যান হবেন। আজ থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, জিএম কাদেরই দলের চেয়ারম্যান।’
নতুন চেয়ারম্যান জিএম কাদের এ সময় মহাসচিবের পাশেই ছিলেন। ছিলেন তার অনুসারি দলের অন্য সিনিয়র নেতারাও।
রওশন যে জিএম কাদেরকে মেনে নেননি, তার প্রমাণ মিললো সোমবার রাতে। সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতির মাধ্যমে ১০ নেতাকে নিয়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরকে তারা মানেন না।
এই ১০ নেতার প্রত্যেকেই দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য। আর আটজন এমপি।
সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা রওশন এরশাদের অফিসিয়াল প্যাডে হাতে লেখা বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমের মারফত জানতে পেরেছি, পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এটি পার্টির যথাযথ কোনো ফোরামে আলোচনা না করেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
রওশন এরশাদ বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদের জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ধারা ২০(২) এর ‘খ’ এর ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন। অর্থাৎ ‘মনোনীত’ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রেসিডিয়ামের সংখ্যাগরিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করবেন। চেয়ারম্যানের অবর্তমানে গঠনতন্ত্রের ধারা ২০(২) এর ‘ক’-কে উপেক্ষা করা যাবে না। আশা করি, বর্তমানে যিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরবর্তী চেয়ারম্যান না হওয়া পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবেই দায়িত্ব পালন করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা করব, পার্টির সকল নেতাকর্মী দলের গঠনতন্ত্রর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন।’
রওশন এরশাদের সঙ্গে বিবৃতিতে একমত পোষণ করে স্বাক্ষরকারীরা হলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও একাদশ সংসদের এমপি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ফখরুল ইমাম, সেলিম ওসমান, লিয়াকত হোসেন খোকা, রওশন আরা মান্নান, নাসরিন জাহান রত্মা, মাসুদা এম রশিদ চৌধুরী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ ও অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন