জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচে) আইসিউতে ভর্তি হয়েছেন। গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় চিকিৎসকরা এরশাদকে আইসিইউতে নেয়ার পরামর্শ দেন। আজ বুধবার সকালে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। জাপা মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা মানবজমিনেক বলেন, স্যার গতকাল জ্বরের কারণে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সিএমএইচে নেয়া হয়। ডাক্তাররা তাকে আইসিইউতে নেয়ার পরামর্শ দেন। তার আর কোনো সমস্যা আছে কিনা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।
জানা গেছে, সকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সিএমএইচের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে সাবেক এই রাষ্ট্রপতিকে।
জাপার মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, স্যার (এরশাদ) তো প্রায়ই সিএমএইচে যান, নিয়মিত চেক-আপ করান। তবে এবার মনে হয় অবস্থা একটু জটিল।
তিনি আরোও জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুর নেয়া হবে কিনা তা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের সকালে পার্টির চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক সভায় বক্তব্যকালে এরশাদকে সিএমএইচে ভর্তির বিষয়টি জানান।
বিকেলে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সাল চিশতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নিয়মিত চেকআপের জন্য তিনি (এরশাদ) প্রত্যেকদিন সকালে এবং বিকেলে সিএমএইচে যান। আজও নিয়মিত চেকআপের জন্য গেলে ডাক্তারের পরামর্শে ভর্তি হয়েছেন সেখানে। এমনও হতে পারে আবার রাতেই তিনি বাসায় ফিরে আসবেন।
সাংগঠনিক সভায় এরশাদের সবশেষ শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে জিএম কাদের বলেন, এরশাদ পরিণত বয়সে উপনীত হয়েছেন। তাই আজ (২৬ জুন) সকালে সিএমএইচে ভর্তি হয়েছেন। এরশাদের নির্দেশিত পথে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতাকর্মীদের নিয়ে এগিয়ে যাবে জাপা।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে গত বছরের ২০ নভেম্বর ইমানুয়েল কনভেনশন সেন্টারে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সামনে সর্বশেষ আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেন এরশাদ। এরপর অসুস্থতার কারণে আর কোনো কর্মসূচিতে অংশ নেননি তিনি। ৬ ডিসেম্বর গাড়িতে করে অফিসের সামনে এলেও সেখানে বসে কথা বলেই চলে যান।
১০ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান এরশাদ। ভোটের মাত্র তিনদিন আগে ২৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরলেও নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে যোগ দেননি। এমনকি নিজের ভোটও দিতে যেতে পারেননি সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।
ভোটের পর শপথ নেন আলাদা সময়ে গিয়ে। সেদিনও স্পিকারের কক্ষে হাজির হয়েছিলেন হুইল চেয়ারে বসে। গত ২০ জানুয়ারি ফের সিঙ্গাপুরে যান চিকিৎসার জন্য। সেখান থেকে ফেরেন ৪ ফেব্রুয়ারি। তবে এখনো কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তাকে দেখা যায়নি। সংসদ অধিবেশনে মাত্র একদিনের জন্য হাজির হয়েছিলেন তাও হুইল চেয়ারে ভর করেই।
অনেক দিন ধরেই অনেটাই জনসম্মুক্ষে আসছেন না সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। হাসপাতাল ও বাসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ তার দৈনন্দিন জীবন। কূটনৈতিকদের সম্মানে আয়োজিত ইফতারে যোগ দিয়েছিলেন কয়েক মিনিটের জন্য।
মানবজমিন/আস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন