দল ও জোটের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ায় বিএনপি থেকে নির্বাচিত এমপি জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলটির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অন্যদিকে একই কারণে বহিষ্কারের হুমকি দেয়ার পরও মোকাব্বির খানকে পাশে বসিয়ে গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলে সভাপতিত্ব করলেন ড. কামাল হোসেন। এতে কামালের বিরুদ্ধে দ্বৈত আচরণের অভিযোগও তোলেন গণফোরাম নেতাদের কেউ কেউ।
বিএনপি থেকে নির্বাচিত কেউ সংসদে যাবেন না, দলটির পক্ষ থেকে বার বার জানানো হলেও ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে নির্বাচিত জাহিদুর রহমান জাহিদ বৃহস্পতিবার সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এরপর দলের চেইন অব কমান্ড নিয়েই প্রশ্ন তোলেন শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে মহিলা দলের কারামুক্ত নেত্রীদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানান দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে মির্জা ফখরুল বলেন, শপথ নেয়ায় জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা মনে করি বিএনপি জনগণের দল, একজন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তাতে এই দলের খুব বড় ক্ষতি হয় না। আমাদের দলের সিদ্ধান্ত যেটা ছিল সেটাই বহাল আছে, যে আমরা শপথ গ্রহণ করবো না। এ বিষয়ে আর দ্বিমত থাকার কথা নয়। দলের সিদ্ধান্ত যারা ভঙ্গ করবেন, তাদের বিরুদ্ধে দল যা ব্যবস্থা নেয়ার নেবে।
এদিকে, রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে গণফোরামের বিশেষ সম্মেলনে সভাপতি ড. কামাল হোসেনের পাশে মঞ্চে দেখা যায় সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নেয়া মোকাব্বির খানকে। বক্তব্যে সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ড. কামাল বলেন, যেসব বিধান রয়েছে, যেখানে আপনাদের ক্ষমতা দেয়া রয়েছে, সংসদের ক্ষমতা রয়েছে, বিচার ব্যবস্থার ক্ষমতা রয়েছে, সেসব ক্ষমতাগুলো রক্ষা করার পাহারাদার কিন্তু আপনারা, আমরাই। আমরা যদি এটা না বুঝে থাকি, তাহলে সংবিধানই থাকবে না।
অনুষ্ঠানে মোকাব্বির খানের উপস্থিতিতে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। ড. কামালের বিরুদ্ধে দ্বিমুখী আচরণের অভিযোগ তোলেন নেতাদের কেউ কেউ।
গণফোরাম প্রশিক্ষণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক বলেন, কামাল হোসেন চেম্বারে গেলে এক ধরনের আচরণ করেন, চেম্বারে গেলে শপথ নিতে না করেন, আবার বাসায় গেলে অন্য কথা, বাসায় গেলে সংসদে যেতে বলেন। তার এই দ্বিমুখী আচরণে আমি খুব ক্ষুব্ধ। আমি এ ধরনের দল করবো না, করবো না।
এ সময় তিনি আরও বলেন, দলের সিদ্ধান্তে নয়, মোকাব্বির ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তেই শপথ নিয়েছেন। এছাড়া মোকাব্বির যা করেছেন, সব কিছু কামালের কথাতেই করেছেন।
পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে হাতেগোনা কয়েকজনকে বক্তৃতার সুযোগ দিয়ে তড়িঘড়ি বিশেষ কাউন্সিলের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় বলেও অভিযোগ নেতাকর্মীদের।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন