হতাশার বৃত্ত ভেঙে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আপনারা হতাশ হবেন না। হতাশার কথা শুনতে চাই না। বিএনপি এখনও নিঃশেষ হয়ে যায়নি। খালেদা জিয়া জেলে থাকুন আর বাইরে থাকুন তিনিই আমাদের প্রেরণার উৎস। তিনি আমাদের শক্তি, সাহস।’
দলটির অতীত তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অতীতেও বহুবার বিএনপি প্রতিটি সংকটে উঠে দাঁড়িয়েছে। দাঁড়িয়েছে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে। কারণ বিএনপি হল এদেশের জনগণের দল।’
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে শত নাগরিক কমিটির আয়োজনে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ ও কবি আবদুল হাই শিকদারের লেখা ‘খালেদা জিয়া- তৃতীয় বিশ্বের কণ্ঠস্বর’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বারবার চেষ্টা হয়েছে বিএনপিকে ভেঙে ফেলার। বারবার চেষ্টা হয়েছে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার। কিন্তু সম্ভব হয়নি। বিএনপি প্রতিবারই জনগণের শক্তি নিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে।’
খালেদা জিয়াকে জীবন্ত কিংবদন্তি উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তিনি একজন সেনানায়কের স্ত্রী। তিনি হঠাৎ ক্ষমতায় বসে পড়েননি। দীর্ঘ ৯ বছর লড়াই সংগ্রাম করে জনগণকে ভালোবেসে, তাদের ভালবাসায় রাষ্ট্র পরিচালার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীন বাংলাদেশে দুজন মানুষের অবদান সবচেয়ে বেশি। তাঁদের একজন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান অপরজন হলেন খালেদা জিয়া। জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আর দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিলেন। এই সময়টা আমাদের মনে করতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইতিহাসের আলোকপাত করে বলেন, ‘এখানে মুরুব্বি যারা আছেন তারা জানেন, বিএনপির ঘোষণাপত্র ছিলো রাষ্ট্রপতি শাসিত রাষ্ট্রব্যবস্থা। কিন্তু যখন স্বৈরাচার এরশাদকে সরাতে জাতীয় ঐক্যের বিষয় আসলো, আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্য করার প্রেক্ষাপট তৈরি হল, তখন এটা একটা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়ালো। রাষ্ট্রপতি শাসিত রাষ্ট্রের ঘোষণার কারণে ঐক্য হচ্ছিল না অথবা ভেঙে যাচ্ছিল। তখন এটা ভেঙে দিয়ে সংসদীয় গণতন্ত্রের ঘোষণা দিয়েছিলেন ১৬ কোটি মানুষের নেত্রী খালেদা জিয়া। সুতরাং মনে রাখতে হবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র বলতে যা কিছু এর সব অবদান জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার।’
‘গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার অবদান সবচেয়ে বেশি বলে আমি মনে করি’- যোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
শত নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ এর সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, গয়েশ্বর রায়, ড.আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকন, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
এসময় বইটির অপর লেখক কবি আব্দুল হাই শিকদারও উপস্থিত ছিলেন।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন