সড়কে নৈরাজ্য বন্ধ ও নিরাপদ সড়ক ইস্যুতে ১৪ দফা দাবি জানিয়েছে গণফোরাম। শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণপরিবহনে নৈরাজ্য ও জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় নিরাপদ সড়ক আন্দোলন’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আমসা আমির এই দাবি জানান।
আমসা বলেন, “শিক্ষার্থীরা যে আট দফা দাবি জানিয়েছে তাদের প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে। পাশাপাশি আমরা ১৪ দফা দাবি জানাচ্ছি।”
দাবির মধ্যে রয়েছে- গণপরিবহন আইন ন্যায্যতার ভিত্তিতে যুগোপযোগী করে তার সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, গণপরিবহন ব্যবস্থাপনা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে, দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে ও অদক্ষ চালকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে, সড়ক দুর্ঘটনায় দোষী চালক ও মালিকদের সাজা নিশ্চিত করতে হবে এবং গণপরিবহন মালিকানার পরিবর্তে ফ্রানসাইজ ভিত্তিতে পরিচালনা করতে হবে।
অন্য দাবিগুলো হলো- মেয়াদোত্তীর্ণ সকল গণপরিবহন রাস্তা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে, ভুয়া ও অদক্ষ চালকদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান চালু রাখতে হবে, গণপরিবহনের জন্য আলাদা লেন করে গণপরিবহনের সেবার মান বাড়াতে হবে, শহরের মধ্যে অবস্থিত সকল সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের সামনে সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে হবে, সড়ক-মহাসড়কের পাশে অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সামনে ফুটওভার ব্রিজ ও স্পিড ব্রেকার তৈরি করতে হবে, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে, সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য রেগুলেটরি বডি নিয়ন্ত্রিত সরকারি ফান্ডের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং পরিবহন কৌশল ও সড়ক সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন সড়কে রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত করার তাগিদ দেন। সুশাসনের মাধ্যমে সড়কে নৈরাজ্য দূর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, “দায়িত্বে অবহেলার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে, এই অবহেলার কারণে দায়ীদের চিহ্নিত করতে হবে। প্রত্যেকবারই দুর্ঘটনার পরে বলা হয় যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, কিন্তু যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা কোনো দিনই হয়নি।”
ড. কামাল বলেন, “মূলত এটা সুশাসনের ঘাটতি। সুশাসনের জন্য দরকার আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ। যে লক্ষণ সামনে রেখে আইন করা হয়, সেটা প্রয়োগ করবে পুলিশ। কিন্তু পুলিশ যদি অন্যভাবে প্রভাবিত হয়, তাদের অন্যভাবে দুর্বল করে ফেলে তখন সে আইনের শাসন থেকে সরে গিয়ে অরাজকতা ঘটে।”
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আবু সাঈদ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন