সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে তার ইচ্ছামাফিক বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, আদালতে আনার আগে খালেদা জিয়া অসুস্থতা কারণে থরথর করে কাঁপছিলেন। বারবার বমি করছিলেন। মাথা সোজা রাখতে পারছিলেন না।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিবরণ দিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশনেত্রীকে চলৎশক্তিহীন করার জন্য তার সুচিকিৎসা করানো হচ্ছে না। মরণাপন্ন অবস্থার মধ্যে টেনে নিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই দেশনেত্রীকে কোনো চিকিৎসা না দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জোর জবরদস্তি করে হুইলচেয়ারে বসিয়ে হাজির করা হয় ক্যাংগারু কোর্টে।
রিজভী বলেন, গত পরশু আদালতে এনে বেগম জিয়াকে বসিয়ে রাখার পর তিনি চোখ মেলাতে পারছিলেন না। মাথা স্থির রাখতে পারছিলেন না। বারবার মাথা কাত হয়ে যাচ্ছিল। আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরাও তার এই অসুস্থ অবস্থা দেখে বিচলিত হয়ে পড়েন।
কতটা অমানবিক নিষ্ঠুর হিংসুক হলে একজন বৃদ্ধা নেত্রীর ওপর এমন নির্যাতন চালানো সম্ভব এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপির এ নেতা বলেন, কতটা নিষ্ঠুর হলে প্রৌঢ় মহীয়সী নারীর ওপর এমন বর্বর নিপীড়ন চালানো সম্ভব হয়? দেশের প্রতিটি সচেতন মানুষ এখন প্রশ্ন করছেন- কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ কি এতটা নির্মম-নির্দয় হতে পারেন?
সরকার খালেদা জিয়াকে জীবিত দেখতে চায় না মন্তব্য করে রিজভী বলেন, আজ দিবালোকের মতো পরিস্কার যে, তিনি অকল্পনীয় জনপ্রিয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জীবিত দেখতে চান না। চিকিৎসার অভাবে গুরুতর অসুস্থ ৭৪ বছরের একজন নারী দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে প্রহসনমূলক বিচারের জন্য কারাগারে স্থাপিত মিডনাইট ইলেকশনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্যাঙ্গারু আদালতে টেনে-হিঁচড়ে প্রায় প্রতিদিনই হাজির করা হচ্ছে।
রিজভী বলেন, আর মাত্র চার দিন পরেই মহান স্বাধীনতা দিবস। হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়ে যিনি এই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জীবন-মৃত্যুকে পরম ভৃত্য করে রণাঙ্গনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অসীম সাহসে, যার ঘোষণায় গোটা জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সেই বীরউত্তম শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশের জনগণের আস্থার প্রতীক দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে উন্মত্ত হয়ে উঠেছে বর্তমান গণবিচ্ছিন্ন অবৈধ সরকার।
তিনি বলেন, আজ আর দেশের মানুষের বুঝতে এতটুকু বাকি নেই যে, প্রধানমন্ত্রীকে চরম প্রতিহিংসার বাসনা চরিতার্থ করতে পেয়ে বসেছে। তিনি পরিত্যক্ত অন্ধকার স্যাঁতসেঁতে কারাগারে গুরুতর ও চূড়ান্ত অসুস্থ দেশনেত্রীর যন্ত্রণার ছটফটানি দেখে আনন্দ উপভোগ করছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন